২০২৫ এশিয়া কাপ নিয়ে আশাবাদী ক্রিকেট বিশ্ব

সম্প্রচারস্বত্বধারী প্রতিষ্ঠান সনি স্পোর্টস নেটওয়ার্ক ইতিমধ্যে তাদের চ্যানেলগুলোতে টুর্নামেন্টের বিজ্ঞাপন প্রচার শুরু করেছে। বিজ্ঞাপনটিতে বাংলাদেশের নাজমুল হোসেন শান্ত, ভারতের সূর্যকুমার যাদব ও শ্রীলঙ্কার চারিত আসালাঙ্কার ছবি দেখা যাচ্ছে। তবে পাকিস্তানি কোনো ক্রিকেটারকে সেখানে রাখা হয়নি, যা অনেকেই চ্যানেলটির ভারতীয় পরিচয়ের কারণে স্বাভাবিক মনে করছেন।

বিজ্ঞাপন প্রচার থেকেই ধারণা করা হচ্ছে, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) ইতিমধ্যে টুর্নামেন্ট আয়োজনের বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছে। কারণ, টুর্নামেন্ট নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলে সাধারণত কোনো সম্প্রচারমাধ্যম এমনভাবে প্রচারণায় নামত না।

ভারতীয় ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২৫ এশিয়া কাপ আয়োজন নিয়ে ইতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা কিছুটা প্রশমিত হওয়া। বিশেষ করে এপ্রিলে কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত–পাকিস্তানের মধ্যে যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল, তা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুই দেশের মধ্যে ‘যুদ্ধবিরতির’ ঘোষণার পর সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছে।

এসব পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ধারণা করা হচ্ছে, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে এসিসির সভা বসবে, যেখানে এশিয়া কাপের চূড়ান্ত সূচি নির্ধারণ করা হতে পারে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে টি–টোয়েন্টি সংস্করণের এই টুর্নামেন্ট শুরু হতে পারে, সম্ভাব্য তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর।

এবারের এশিয়া কাপে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের। যদিও পূর্বে ঘোষণা অনুযায়ী ওমান ও হংকংও খেলার কথা ছিল, তবে শেষ পর্যন্ত তাদের না রাখার সম্ভাবনাই বেশি।

২০২৫ এশিয়া কাপ আয়োজনে আবারও 'হাইব্রিড মডেল'-এর চিন্তাভাবনা চলছে। মূল আয়োজক হিসেবে ভারতের নাম থাকলেও পাকিস্তানের ম্যাচগুলো সংযুক্ত আরব আমিরাতে আয়োজনের বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে। এটি ২০২৩ সালের মতোই বিসিসিআই ও পিসিবির মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে হচ্ছে, যেখানে দুই দেশের দল একে অপরের মাটিতে খেলতে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল।

ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপোড়েন সত্ত্বেও এশিয়া কাপে তাদের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট বেশি। এর অন্যতম কারণ সম্প্রচার স্বত্ব চুক্তি। সনি স্পোর্টস নেটওয়ার্ক ১৭ কোটি মার্কিন ডলারে চার আসরের সম্প্রচার স্বত্ব কিনেছে, যার একটি অনানুষ্ঠানিক শর্ত ছিল প্রতি আসরে অন্তত দুটি ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ আয়োজন। এমনকি যদি উভয় দল ফাইনালে উঠে, তাহলে তিনবার মুখোমুখি হওয়ার সুযোগও থাকবে।

এই ম্যাচগুলো না হলে সনি স্পোর্টস স্বাভাবিকভাবেই পুরো অর্থ দিতে রাজি হবে না, যা এসিসির জন্য অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির কারণ হতে পারে। উল্লেখ্য, এসিসির হিসাবে ২০২৫ এশিয়া কাপ আয়োজন করতে আনুমানিক ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার ব্যয় হতে পারে, যার ৭৫ শতাংশ আসবে সম্প্রচারস্বত্ব থেকেই। এই রাজস্ব পাঁচ স্থায়ী সদস্য বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান সমানভাবে ভাগ করে নেবে।

সবকিছু ঠিকঠাক চললে সেপ্টেম্বরেই মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে মাঠে নামবে এশিয়ার সেরা দলগুলো।