গাজায় ইসরাইলি অবরোধে অপুষ্টিতে ৬৬ শিশুর মৃত্যু

রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫ ৩:৪৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
টানা হামলা ও কঠোর অবরোধের মধ্যে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অপুষ্টিজনিত কারণে অন্তত ৬৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
গাজার সরকারি মিডিয়া দপ্তরের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
শনিবার এক বিবৃতিতে গাজার মিডিয়া দপ্তর জানায়, এই অবরোধকে তারা একটি ‘যুদ্ধাপরাধ’ এবং ‘ঠান্ডা মাথায় সংঘটিত পরিকল্পিত শিশু হত্যা’ হিসেবে বিবেচনা করছে। বিবৃতিতে বলা হয়, “গাজার শিশুদের খাবার, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা থেকে বঞ্চিত করে ইসরাইল ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”
দপ্তরটি আরও বলেছে, এই ভয়াবহ মানবিক সংকটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা মানবতার প্রতি চরম উদাসীনতা ও ব্যর্থতার প্রতীক। গাজা প্রশাসন শুধু ইসরাইলকেই নয়, বরং তার পশ্চিমা মিত্র বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানিকেও এই সংকটের জন্য দায়ী করেছে।
তারা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন অবিলম্বে গাজার সব সীমান্তপথ খুলে দেওয়া হয় এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত করা হয়।
অন্যদিকে, শিশুদের জন্য কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফ জানায়, গাজায় শিশুদের মধ্যে অপুষ্টিজনিত সমস্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সংস্থাটি জানায়, চলতি বছরের মে মাসেই ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী অন্তত ৫,১১৯ শিশু তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা পেয়েছে যা গত এপ্রিলের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ এবং ফেব্রুয়ারির তুলনায় ১৫০ শতাংশ বেশি।
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারিতে একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির সময় গাজায় কিছু মানবিক সহায়তা প্রবেশ করেছিল।
ইউনিসেফের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার আঞ্চলিক পরিচালক এদুয়ার বেইগবেদার বলেন, “জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে মাত্র ১৫০ দিনে ১৬,৭৩৬ শিশুকে অপুষ্টির জন্য চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১১২ জন শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। অথচ এই প্রতিটি শিশুর জীবন বাঁচানো সম্ভব ছিল। প্রয়োজনীয় খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সহায়তা সীমান্তেই আটকে আছে। এটি সম্পূর্ণভাবে মানবসৃষ্ট সংকট।”
তিনি ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সব সীমান্ত পথ খুলে দিয়ে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা গাজায় প্রবেশের সুযোগ দিতে হবে অবিলম্বে।”
১০৮ বার পড়া হয়েছে