সর্বশেষ

সারাদেশ

চিরবিদায় নিলেন 'শেষ ঠিকানার কারিগর' মনু মিয়া

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

শনিবার, ২৮ জুন, ২০২৫ ৮:১৯ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
মানবিকতা ও নিঃস্বার্থ সেবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে চিরবিদায় নিয়েছেন কিশোরগঞ্জের ইটনার ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ খ্যাত মো. মনু মিয়া (৬৭)।

শনিবার (২৮ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. বাহাউদ্দিন ঠাকুর।

প্রায় অর্ধশত বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে তিন হাজারেরও বেশি কবর খনন করে মানুষের শেষ বিদায়ে সহায়তা করেছেন মনু মিয়া। আশপাশের এলাকা ও পুরো জেলাজুড়েই তিনি ছিলেন পরিচিত এক মানবিক মানুষ হিসেবে। মানুষের শেষ গন্তব্যের এই সাথী ছিলেন নিঃস্বার্থ কর্মের মূর্ত প্রতীক।

এক সময় সময়মতো কবর খননের জায়গায় পৌঁছাতে নিজের দোকান বিক্রি করে কিনেছিলেন একটি ঘোড়া। সেই ঘোড়ার পিঠে চড়ে দ্রুত পৌঁছে যেতেন মৃত ব্যক্তির বাড়িতে। কিন্তু সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালে দুর্বৃত্তরা তার সেই বহু বছরের সঙ্গী ঘোড়াটিকে হত্যা করে। এ ঘটনায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা ও ঢাকার আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ মো. রোকন রেজা।

রোকন রেজা বলেন, ‘আমি হাসপাতালে গিয়ে তাকে বলেছিলাম—অনেকে আপনাকে নতুন ঘোড়া কিনে দিতে চান। কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি। বলেছিলেন, “আমি এই কাজ করি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। মানুষের কাছ থেকে কিছু নিতে চাই না।”’

মনু মিয়ার মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই তাকে স্মরণ করছেন শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়। প্যানেল চেয়ারম্যান বাহাউদ্দিন ঠাকুর বলেন, ‘ঘোড়ার মৃত্যুর পর থেকে তিনি আরও দুর্বল হয়ে পড়েন। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরলেও আর আগের মতো হতে পারেননি। আমরা এক মহান হৃদয়ের মানুষকে হারালাম।’

স্থানীয়রা জানান, মনু মিয়া কেবল একজন কবর খননকারী নন, ছিলেন একজন মানবিক মানুষের প্রতীক। মৃত্যুর পরও মানুষের দোয়া ও ভালোবাসায় তিনি বেঁচে থাকবেন—এই বিশ্বাস রাখছেন এলাকাবাসী।

১১৮ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন