সর্বশেষ

জাতীয়

ভরা মৌসুমেও চালের বাজারে অস্থিরতা

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

বৃহস্পতিবার , ২৬ জুন, ২০২৫ ৭:১২ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
চালের ভরা মৌসুমেও বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে ক্রেতাদের বাড়তি দামে চাল কিনতে হচ্ছে, অথচ এর পেছনে নির্ভরযোগ্য কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না খোদ বিক্রেতারাও।

বরাবরের মতো মিল মালিকদের দিকে অভিযোগের তীর ছুঁড়ছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে মিলারদের দাবি, তারা ধান কিনতে বাধ্য হচ্ছেন উচ্চ দামে, যার জন্য দায়ী অবৈধ মজুতদারেরা।

অর্থনীতিবিদরা এই পরিস্থিতিকে দেখছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও করপোরেট গোষ্ঠীর কৃত্রিম সংকট তৈরির ফল হিসেবে। তারা বলছেন, বাজারে নজরদারি জোরদার না হলে এমন পরিস্থিতি আরও প্রকট হতে পারে।

বাজারে দাম বাড়ার অজুহাত অস্পষ্ট
রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা চালের দাম প্রতি কেজিতে ২-৩ টাকা এবং সরু চালের দাম ৭-৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। প্রতিটি বস্তার দাম ৪০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। অথচ তারা বলছেন, বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক এবং চাহিদাও বাড়েনি। এমনকি পরিবহন ব্যয় বা শ্রমিকের মজুরিতেও পরিবর্তন হয়নি।

চাল ব্যবসায়ী রাকিব বলেন, “ঈদের পর থেকেই চালের দাম বাড়তে শুরু করে। অথচ কোনো সংকট নেই। দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণও বুঝতে পারছি না।”

মিল মালিকদের যুক্তি
বাংলাদেশ অটো, মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সহিদুর রহমান পাটোয়ারি জানান, “বাজারে অসাধু মজুতদাররা ধানসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য মজুত করছে। ফলে আমরা বাধ্য হচ্ছি বেশি দামে ধান কিনতে। এর প্রভাব সরাসরি চালের দামে পড়ছে।”

তবে ক্রেতারা প্রশ্ন করছেন যখন সরকারিভাবে চালের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে, তখন ভোক্তাপর্যায়ে এমন মূল্যবৃদ্ধি কেন?

অর্থনীতিবিদদের বিশ্লেষণ ও পরামর্শ
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান মনে করেন, “কিছু মিল মালিক, বড় ব্যবসায়ী ও করপোরেট হাউজের কারসাজিতে চালের বাজার অস্থির হয়েছে। সরকারের উচিত নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।”

তিনি আরও বলেন, “যথাযথ নজরদারি না থাকায় কিছু গোষ্ঠী মুনাফার আশায় কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। কঠোর হস্তক্ষেপ ছাড়া এই সমস্যা সমাধান হবে না।”

প্রশাসনের হুঁশিয়ারি
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, “চালকল মালিকরা খাদ্য অধিদফতরের নিয়ম ভঙ্গ করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু মিলার নয়, পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরাও যদি বাজার অস্থির করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

সরকারি মজুত পর্যাপ্ত
খাদ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে মোট খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে ১৬ লাখ ৭১ হাজার টন। এর মধ্যে চালের মজুতই রয়েছে প্রায় ১২ লাখ ৭৫ হাজার টন। ফলে সরবরাহ ঘাটতির প্রশ্নই ওঠে না, বরং বাজার ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও কঠোর নজরদারির অভাবই মূল সমস্যা হিসেবে উঠে আসছে।

১২২ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ সব খবর
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন