যুদ্ধবিরতির পর দেশে ফিরতে আগ্রহ হারাচ্ছেন ইরানপ্রবাসী বাংলাদেশিরা

বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫ ১:৫৩ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার জেরে দেশে ফেরার জন্য যেসব বাংলাদেশি নিবন্ধন করেছিলেন, যুদ্ধবিরতির পর তাদের অনেকেই আর ফিরতে আগ্রহী নন।
এ অবস্থায় তেহরান থেকে ফেরত পাঠানোর জন্য নির্ধারিত বাসেও যাত্রী সংকটে পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।
বুধবার (২৫ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও তেহরানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, এখন পর্যন্ত দেশে ফেরার জন্য ২৫০ জন বাংলাদেশি নিবন্ধন করেছেন। তবে আজ (বুধবার) রাতে তেহরান থেকে পাকিস্তান সীমান্তের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকা বাসে প্রাথমিকভাবে ৯২ জন যাত্রী নির্ধারিত থাকলেও যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর সেই সংখ্যা কমে ৪০ জনে নেমে আসে। শেষ পর্যন্ত এই সংখ্যাও ২০-এর নিচে নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
ওই কর্মকর্তা বলেন, “বাস ভর্তি তো দূরের কথা, বাসে একজন যাত্রীও পাওয়া যাবে কি না, সেটিই এখন প্রশ্ন।”
সরকার যুদ্ধাবস্থার সময় দেশে ফেরত আসতে আগ্রহীদের জন্য একটি রুট নির্ধারণ করেছিল। সেই পরিকল্পনায়, ইরানের মারজাভেহ থেকে বেলুচিস্তানের তাফতান সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশের ব্যবস্থা রাখা হয়। এরপর তাদের করাচি হয়ে দুবাই ট্রানজিটে ঢাকায় ফেরানোর প্রস্তুতি ছিল। করাচি–দুবাই রুট ছাড়াও বিকল্প কিছু রুটও সরকারের বিবেচনায় ছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইরান-পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের কূটনীতিকরা জানান, শুরুতে চিকিৎসারত নারী ও শিশুদের অগ্রাধিকার দিয়ে ফেরানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তেহরানে চিকিৎসার জন্য আসা অনেক বাংলাদেশিই নিবন্ধিত ছিলেন, যাদের মধ্যে কিডনি প্রতিস্থাপন রোগীও আছেন। কিন্তু যুদ্ধের ভয় কেটে যাওয়ায় এখন তারা আর স্থলপথে কষ্টকর ভ্রমণ করতে চান না। তারা আকাশপথ চালু হলে সরাসরি বিমানে ফেরার অপেক্ষায় আছেন।
ইরানে বর্তমানে প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশি অবস্থান করছেন, যার মধ্যে শুধু তেহরানেই আছেন প্রায় ৪০০ জন। দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাসে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশির সংখ্যা ৬৭২ জন, যাদের মধ্যে শিক্ষার্থী ৬৬ জন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অনেক বাংলাদেশির বৈধ কাগজপত্র না থাকায় যুদ্ধকালীন আতঙ্কে তারা শুরুতে দেশে ফিরতে চাইলেও এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ফেরার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলেছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১২ জুন ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরানের একটি সামরিক স্থাপনা আক্রান্ত হয়। পাল্টা জবাবে ১৩ জুন ইরান ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। এরপর ২১ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় বাংকারবিধ্বংসী বোমা হামলা চালালে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে। টানা ১২ দিনের এই সংঘাতের পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গতকাল (মঙ্গলবার) যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই পক্ষ।
১০৯ বার পড়া হয়েছে