ত্রাণকেন্দ্রে ইসরাইলি গুলিতে ৪১০ ফিলিস্তিনি নিহত: জাতিসংঘের উদ্বেগ

বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫ ৯:০৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
গাজা উপত্যকায় বিতর্কিত সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রের আশপাশে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ৪১০ ফিলিস্তিনির মৃত্যুকে যুদ্ধাপরাধের সম্ভাব্য উদাহরণ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় (OHCHR)।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ জানায়, ২৭ মে থেকে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF) গাজায় যে বিকল্প সহায়তা কেন্দ্রগুলো চালু করেছে, সেগুলোর কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এই কেন্দ্রগুলো জাতিসংঘ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ত্রাণ বিতরণ প্রক্রিয়াকে বাইপাস করে পরিচালিত হচ্ছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের মুখপাত্র থামিন আল-কেতান বলেন, “এই বিতরণ কেন্দ্রগুলোর চারপাশে বিশৃঙ্খলা, গুলিবর্ষণ এবং হতাহতের ঘটনা প্রায় নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। চরম দুর্ভিক্ষের মুখে থাকা ফিলিস্তিনিরা খাবারের আশায় যখন সেখানে জড়ো হন, তখনই এমন প্রাণঘাতী হামলার শিকার হচ্ছেন তারা।”
তিনি আরও বলেন, “ইসরাইলের সামরিক নিয়ন্ত্রিত ত্রাণ ব্যবস্থাপনা আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা মানদণ্ডের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বেসামরিক জনগণের মৌলিক অধিকার, যেমন খাদ্য ও জীবনরক্ষাকারী সহায়তা, অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হলে তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।”
জাতিসংঘ জানায়, এই বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশপাশে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের কেউ গুলিবিদ্ধ হয়ে, আবার কেউ ইসরাইলি গোলাবর্ষণে প্রাণ হারিয়েছেন। একইসঙ্গে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থার সরবরাহ বহর লক্ষ্য করে চালানো গুলিতে আরও অন্তত ৯৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
মানবিক সমন্বয় সংস্থাগুলোর মতে, গাজায় পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন বয়সের বহু মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন বা আহত হচ্ছেন। ত্রাণ সরবরাহ পর্যাপ্ত না হওয়ায় যারা এখনও জীবিত, তাদের মৌলিক চাহিদাও পূরণ করা যাচ্ছে না।
এদিকে, জাতিসংঘের পূর্বের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, GHF-সংশ্লিষ্ট কয়েকজন ফিলিস্তিনি কর্মীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে, যেটি ঘটিয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে হামাস-ঘনিষ্ঠ কিছু সশস্ত্র ব্যক্তি।
জাতিসংঘের এই বিবৃতি এমন এক সময় এলো, যখন গাজায় দীর্ঘমেয়াদী মানবিক সংকট আরও গভীর হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা কার্যক্রমের ওপর হামলার ঘটনা বাড়ছে।
১২৪ বার পড়া হয়েছে