সর্বশেষ

জাতীয়

চিকুনগুনিয়ার ভয়াবহ সংক্রমণ ঢাকায়, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫ ৮:২৫ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
ঢাকার বাসাবোর গৃহবধূ জিনাত পারভিন ফেব্রুয়ারিতে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করিয়েও ফলাফল নেগেটিভ আসে।

পরবর্তীতে চিকুনগুনিয়ার পরীক্ষা করানোর জন্য তিনি প্রায় ১০টি সরকারি–বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরেছেন, কিন্তু কোনো অ্যান্টিজেন বা এনসিএইচআর কিট পাওয়া যায়নি। অবশেষে একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়, তবে রোগ নির্ণয় হয়নি।

 🧬 সংক্রমণের ছোঁয়া: আইসিডিডিআর,বির সতর্কতা
জুন মাসের প্রথম তিন সপ্তাহে ঢাকায় জ্বর ও উপসর্গ নিয়ে ১৭১ জন রোগীর মধ্যে ১৪০ জনের (৮২%) শরীরে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, যা উচ্চ সংক্রমণের লক্ষণ ।
২০১৭ সালে ঢাকায় প্রথম অপ্রত্যাশিত ধরনের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়, যদিও সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষার কিট সরবরাহ বন্ধ করা হয় কারণ তখন চিকুনগুনিয়াকে “কম গুরুত্বের রোগ” বিবেচনা করা হয় ।

🔬 গবেষণার ফলাফল: দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা
২০২৪ সালের অক্টোবর–ডিসেম্বরের জরিপে ৩৯৪ উপসর্গধারী থেকে ১৩৮ জন (৩৫%) পজিটিভ পাওয়া যায়; তাদের মধ্যে ৯৮.৫% ঢাকার বাসিন্দা ।

আক্রান্তদের ৬৫% পুরুষ, ৩৫% নারী; প্রায় ৮৩% রোগীর বয়স ৩০ বছরের বেশি।
রোগীদের ৯৬% জয়েন্ট পেইন, ২৯.৪% ক্লান্তি, ১৯% অস্থিসন্ধিতে ফোোলা, এবং ৮১% উপসর্গ ২৮ দিন পরও ছিল।

💰 আর্থ-সামাজিক প্রভাব
আক্রান্ত ব্যক্তির গড়ে শ্রমদিবস হারিয়েছে ১০.৫ দিন, যার আর্থিক ক্ষতি গড়ে ৭৩.৩ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ≈ ৮ হাজার টাকা) ।

🦟 পরিবেশ ও মশা নিয়ন্ত্রণ
ঢাকার এডিস মশার বিস্তার ও আবহাওয়া সংক্রমণ বৃদ্ধির পক্ষে সহায়ক ।
কীটনাশক প্রয়োগে বাহকভিত্তিক ব্যবস্থার অভাব আছে লার্ভা ও এডাল্ট মশার জন্য আলাদা ইনসেকটিসাইড প্রয়োজন, কিন্তু প্রয়োগ অপ্রতুল ও অনিয়ন্ত্রিত ।

🏥 চিকিৎসা ব্যবস্থা: পরীক্ষার অভাব এবং ভারসাম্য
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সরকারি হাসপাতালগুলোতে নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই, তবে রেফারেন্স ল্যাবে নমুনা পাঠানো হয় ।
বড় সমস্যা বিষয়টি: “ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিসে নির্ভরতা বেশি।” অথচ উপসর্গ-ভিত্তিক রোগ নির্ণয় ভুল হলে ভুল চিকিৎসা ও সময়ের অপচয় হতে পারে।

⚠️ সতর্কবার্তা ও নীতির প্রয়োজন
চিকুনগুনিয়া মৃত্যুর কারণ নয় তবে দীর্ঘমেয়াদী সংক্রমণ, জয়েন্টে ব্যথা, কর্মদক্ষতা হ্রাস ও অর্থনৈতিক ক্ষতি ঘটায়। এটিকে “হালকা ভাইরাস জ্বর” হিসেবে অবহেলা মারাত্মক হতে পারে ।
সময়োপযোগী রোগ নির্ণয় (রক্ত পরীক্ষার কিটের প্রয়োজন), সঠিক কীটনাশক ব্যবস্থাপনা, নগর পরিচ্ছন্নতা ও জনসচেতনতায় বিনিয়োগ জরুরি।

✅ সুপারিশ
পরীক্ষার ব্যবস্থা: সরকারি হাসপাতালে Antigen/IgM কিট সরবরাহ করা হোক।
মশা নিয়ন্ত্রণ: এলাকা ভিত্তিক বাহক লক্ষ্য করে Larvicide ও Adulticide প্রয়োগ নিশ্চিত করা।
রোগ নির্ণয়: ক্লিনিক্যাল ও ল্যাব সাপোর্ট মিশ্রভাবে ব্যবহার করা।
জনসচেতনতা ও পরিকল্পনা: নগর পরিকল্পনা, পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা ও আদালত সংশোধন উচিত।

১২০ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন