এক দশক পর দুইজনের মৃত্যুদণ্ড, একজনের যাবজ্জীবন

মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫ ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
চাঁদপুরের কচুয়ায় ১২ বছর বয়সী মাদরাসা ছাত্র মিলন হোসেনকে হত্যার ঘটনার প্রায় এক দশক পর আদালত রায় দিয়েছেন।
সম্পত্তি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে ঘটানো এই হত্যার দায়ে দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২) সৈয়দ তাফাজ্জল হোসেন হিরু এই রায় ঘোষণা করেন।
নিহত মিলন হোসেন কচুয়া উপজেলার কান্দিরপাড় গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির বাসিন্দা মো. তাজুল ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয় চাপাতলী মাদরাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
আসামিদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—শামিম হোসেন (২৮) ও সোহাগ হোসেন (২৮)। অন্যদিকে, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত রাব্বি হোসেন (২৮) একই গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার নথিপত্র অনুযায়ী, মিলনের বাবা তাজুল ইসলামের সঙ্গে আসামিদের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। ২০১৫ সালের ২৯ জুন দুপুরে মিলন রহিমানগর বাজারে যাওয়ার পর আর বাড়ি ফেরেনি। পরদিন ৩০ জুন তার বড় ভাই রিপন হোসেন কচুয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
হত্যার বিবরণ ও মামলার অগ্রগতি
এরপর ২ জুলাই স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, পূর্বশত্রুতার জেরে শামিম, সোহাগ ও রাব্বি—তিনজন মিলে মিলনকে পাশের একটি জমিতে নিয়ে পানিতে ডুবিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ তিনজন আসামিকেই গ্রেপ্তার করে এবং ওই দিনই মিলনের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের ভাই রিপন হোসেন বাদী হয়ে কচুয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত করেন তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ওয়াজেদ আলী, যিনি ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
আদালতের রায়
মামলায় দীর্ঘ ১০ বছরে ২২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক রায় ঘোষণা করেন। রায়ে শামিম ও সোহাগকে মৃত্যুদণ্ড, ১ লাখ টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অপর আসামি রাব্বিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) কামাল উদ্দিন আহমেদ জানান, "বিচারক আসামিদের উপস্থিতিতে মামলার যাবতীয় বিবরণ ও সাক্ষ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা করে এই রায় দিয়েছেন।"
আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরুল হক কমল।
১২৪ বার পড়া হয়েছে