চার মাস ধরে বন্ধ নড়াইলের পানতিতা-টেপারিপাড়া সড়কের নির্মাণ কাজ

মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫ ৯:১৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
নড়াইল সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের পানতিতা খেয়াঘাট থেকে টেপারিপাড়া পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ গত চার মাস ধরে বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মধ্যে মালিকানা নিয়ে বিরোধের কারণে থমকে গেছে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক প্রকল্পের কার্যক্রম।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্ষার কাদা ও পানি জমে থাকা সড়কটি এখন পুরোপুরি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কেউ জুতা হাতে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, কেউ আবার বাইসাইকেল কাঁধে করে পার হচ্ছেন। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষ। সড়কের দুই পাশে রাখা রয়েছে ইটের কোয়ার স্তুপ, কিন্তু কাজের কোনো অগ্রগতি নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম জানান, “রাস্তার কাজ বন্ধ থাকায় বর্ষায় হাঁটতে কষ্ট হয়। মোটরসাইকেল চালানোতো আরও কঠিন। সবচেয়ে কষ্ট পায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।”
জানা গেছে, সড়কটির উন্নয়নে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ২ কোটি ৯২ লাখ ৮৫ হাজার ৯২৭ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ২০২৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ‘ফকির এন্টারপ্রাইজ’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করলেও অর্ধেক কাজ হওয়ার পর পাউবো বাধা দিলে নির্মাণ বন্ধ হয়ে যায়।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী জাহিদুল ইসলাম বলেন, “এলজিইডি অনুমোদন দিয়েছিল বলেই আমরা কাজ শুরু করি। কিন্তু পরে পাউবো জানায়, ওয়াপদার আওতাধীন এই সড়কে কাজ করতে হলে তাদের ‘অনাপত্তি সনদ’ (এনওসি) লাগবে। আমরা তখন এনওসি চাইলেও ইতোমধ্যে পাউবো বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে একই সড়কে একটি প্রকল্প অনুমোদন করিয়ে নেয়। ফলে তারা এখন আমাদের কাজ করতে দিচ্ছে না।”
এ প্রসঙ্গে এলজিইডির সদর উপজেলার প্রকৌশলী খাইরুল ইসলাম বলেন, “এনওসি না নেওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা চলছে।”
এদিকে নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজিৎ কুমার সাহা বলেন, “ওয়াপদার আওতাধীন সড়কে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রকল্প চলছে। সেই প্রকল্প শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য কোনো সংস্থাকে কাজ করার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।”
এখন সংশ্লিষ্ট দুই দপ্তরের সমন্বয় ছাড়া কাদা-মাখা সড়ক দিয়ে তিন গ্রামের হাজারো মানুষের দুর্ভোগ নিরসনের কোনো পথ নেই। দ্রুত সমাধান না হলে বর্ষাকালে জনদুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
১২২ বার পড়া হয়েছে