উপসাগরে উত্তেজনায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি

সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫ ৭:৩৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা, বিশেষ করে পারস্য উপসাগর ও হরমুজ প্রণালী অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন ও ইসরায়েলি হামলা এবং এরপর থেকে উত্তেজনা আরও বেড়েছে, যার প্রভাব সরাসরি পড়েছে জ্বালানি তেলের সরবরাহ ও মূল্যে।
বিশ্ববাজারে তেলের দামে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে মূলত হরমুজ প্রণালীর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে। এই প্রণালী দিয়ে প্রতিদিন বিশ্বের মোট তেল সরবরাহের প্রায় এক পঞ্চমাংশ পরিবাহিত হয়। ইরান যদি এই প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তাহলে বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। এরই মধ্যে জ্বালানি তেলবাহী জাহাজের ভাড়া প্রায় ৯০ শতাংশ বেড়েছে এবং জিপিএস সিগনাল জ্যামের মতো ঘটনাও ঘটছে।
বর্তমানে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারসের দাম ব্যারেলপ্রতি ৭৮ থেকে ৭৯ ডলারের মধ্যে উঠেছে, যা গত পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের দামও ব্যারেলপ্রতি ৭৫ থেকে ৭৬ ডলারে পৌঁছেছে। বিশ্লেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন, যদি ইরান যুক্তরাষ্ট্র বা উপসাগরীয় তেল অবকাঠামোতে পাল্টা আঘাত হানে, তাহলে দাম আরও বাড়তে পারে এবং ব্যারেলপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ ডলারে উঠতে পারে।
বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা পুরোপুরি আমদানিনির্ভর। দেশের প্রয়োজনীয় জ্বালানির ৮০ শতাংশের বেশি আসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। হরমুজ প্রণালী দিয়ে বিশ্বের প্রায় ৩৩ শতাংশ অপরিশোধিত তেল পরিবাহিত হয়। এই পথ যদি সামরিক উত্তেজনার কারণে বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম আরও বাড়বে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতি ৯ শতাংশের কাছাকাছি রয়েছে। তেলের দাম আরও বাড়লে বিদ্যুৎ, পরিবহন ও শিল্পখাতের খরচ বাড়বে এবং সাধারণ জনগণের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাবে।
১২৫ বার পড়া হয়েছে