রাশিয়ায় যাচ্ছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পুতিনের সঙ্গে 'গুরুতর বৈঠক'

রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫ ১১:৫২ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মার্কিন হামলার পর ইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যেই রাশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি।
রোববার (২২ জুন) তিনি মস্কোর উদ্দেশ্যে রওনা দেন এবং সোমবার (২৩ জুন) রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে’ বসার কথা রয়েছে।
তুরস্কের ইস্তানবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে আরাঘচি বলেন, “রাশিয়া আমাদের বন্ধু এবং আমরা একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব বজায় রেখে চলছি। আমরা সবসময় একে অপরের সঙ্গে পরামর্শ করি ও আমাদের অবস্থান সমন্বয় করি।” তিনি জানান, রাশিয়া ইরানের পরমাণু চুক্তি (জেসিপিওএ) স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে চলমান সহযোগিতা আরও জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হবে বলেও জানান তিনি।
মার্কিন হামলায় ইরানের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংসের দাবি
এর আগে স্থানীয় সময় শনিবার (২১ জুন) গভীর রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র সফলভাবে ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে। তার ভাষায়, “এই স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।”
ট্রাম্প আরও বলেন, “হয় শান্তি আসবে, নয়তো ইরানের জন্য গত আট দিনে যা ঘটেছে, তার চেয়েও বড় ট্র্যাজেডি অপেক্ষা করছে। এখনো অনেক লক্ষ্যবস্তু বাকি আছে। শান্তি দ্রুত না এলে, নির্ভুলতা ও দক্ষতার সঙ্গে পরবর্তী হামলা চালানো হবে।”
তবে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা দাবি করেছে, যেসব স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে, সেখানে তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছিল না।
ইসরায়েলের দিকে পাল্টা হামলা, উত্তেজনা আরও বেড়েছে
মার্কিন হামলার জবাবে ইরানও চুপ ছিল না। দেশটি ইসরায়েলের দিকে কয়েক দফা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। তাদের দাবি, ইরান থেকে ছোড়া অন্তত দুটি ক্ষেপণাস্ত্র তারা শনাক্ত করেছে।
তেল আবিবে বিমান হামলার সতর্কতা সাইরেন বেজে উঠেছে এবং জেরুজালেমে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এতে অন্তত ১১ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করে হামলার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। এক বিবৃতিতে আইডিএফ বলেছে, “ইরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আমাদের ভূখণ্ডের দিকে আসছিল, যেগুলো আমরা সময়মতো শনাক্ত করেছি।”
বিশ্লেষকদের দৃষ্টিতে
পর্যবেক্ষকদের মতে, এমন একটি উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ইরান-রাশিয়ার মধ্যকার এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক দুই দেশের কূটনৈতিক অবস্থানকে সমন্বিত করতে সহায়ক হবে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে এই বৈঠককে কৌশলগত জোটবদ্ধতার এক বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
১২৩ বার পড়া হয়েছে