যুক্তরাষ্ট্রের ইরান হামলার ধাক্কা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে, ডিএসইতে ৭৬ পয়েন্ট পতন

রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫ ১০:১১ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলার রেশ বাংলাদেশের শেয়ারবাজারেও স্পষ্টভাবে পড়েছে।
রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বড় ধরনের দরপতন ও লেনদেন খরার চিত্র দেখা গেছে।
জানা গেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৩ হাজার কেজি ওজনের ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর বোমা দিয়ে ইরানের ফরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এই ঘটনার পর মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ আরও বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের পুঁজিবাজারে।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, রোববার বাজারে লেনদেন শুরুর আগেই ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসে আতঙ্ক ছড়ায়। ফলে লেনদেন শুরু হতেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা দেখা দেয়, যা দিনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এদিন ৭৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪৬৭৭ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২১ পয়েন্ট কমে হয়েছে ১০১৬ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৭৫৮ পয়েন্টে।
দিন শেষে ডিএসইতে মাত্র ১৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, বিপরীতে ৩৬৫টি প্রতিষ্ঠানের দাম কমেছে, এবং ১৬টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। সবমিলিয়ে লেনদেন কমে এসেছে ২৭১ কোটি ৭০ লাখ টাকায়, যা আগের কার্যদিবসের তুলনায় প্রায় ৩৩ কোটি টাকা কম।
লেনদেনে শীর্ষে ছিল লাভেলো আইসক্রিম, যার ১৯ কোটি ৬১ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে বিচ হ্যাচারি (৯.৫৭ কোটি) এবং ব্র্যাক ব্যাংক (৮.৪২ কোটি টাকা)। শীর্ষ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকায় আরও রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ফাইন ফুডস, উত্তরা ব্যাংক, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, সিটি ব্যাংক, ওরিয়ন ইনফিউশন এবং ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৭১ পয়েন্ট। এখানে ২০৭টি কোম্পানির মধ্যে ২৯টির দাম বেড়েছে, ১৫৩টির কমেছে এবং ২৫টির কোনো পরিবর্তন হয়নি। লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ৩৫ লাখ টাকার।
শেয়ারবাজার বিশ্লেষকদের মতে, চলমান আন্তর্জাতিক অস্থিরতা, বিশেষ করে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সংঘর্ষের প্রেক্ষাপট, বাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। যদিও দীর্ঘদিন ধরে বাজারে মন্দা চলছিল, তবে হঠাৎ করে এমন ঘটনার প্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক আরও বেড়েছে।
তাদের মতে, এই আতঙ্ক যদি কাটিয়ে উঠতে পারে, তবে বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পারে। তবে বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকারের দৃশ্যমান উদ্যোগ প্রয়োজন।
১২২ বার পড়া হয়েছে