রোহিঙ্গাদের স্থায়ী বসবাসের অনুমতি নয়: ড. মুহাম্মদ ইউনূস

রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫ ৬:৩৪ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দেওয়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, “বাংলাদেশের নীতিই হচ্ছে রোহিঙ্গারা ক্যাম্পের বাইরে স্থায়ীভাবে থাকতে পারবে না। আমাদের দেশের পক্ষে আর একটি নতুন জনগোষ্ঠীর বোঝা বহন করা সম্ভব নয়।”
সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সফরের সময় বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
২০১৭ সাল থেকে মিয়ানমারের সামরিক দমন-পীড়নের মুখে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে লাখো রোহিঙ্গা। কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্পে বর্তমানে প্রায় ১২ থেকে ১৩ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে, যাদের মধ্যে অন্তত ৫২ শতাংশ নারী ও শিশু।
ড. ইউনূস বলেন, “এই সংকটের একমাত্র গ্রহণযোগ্য সমাধান হলো—রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো। আমরা সর্বোচ্চ সহানুভূতির পরিচয় দিয়েছি। সীমান্ত বন্ধ করিনি, তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এই সমস্যার সমাধানে তারা সক্রিয়ভাবে পাশে থাকবে। সেই প্রতিশ্রুতি আজও পূরণ হয়নি।”
তিনি আরও জানান, জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে এক লাখেরও বেশি শরণার্থীর সঙ্গে কথা বলেছেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকে তার পরামর্শ—সবার আগে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের পথ তৈরি করতে হবে।
ড. ইউনূস বলেন, “আন্তর্জাতিক মহল শুধু খাদ্য ও ত্রাণ সহায়তায় ব্যস্ত, কিন্তু তাদের কীভাবে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো যাবে, সে বিষয়ে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই।”
মিয়ানমারের সামরিক সরকারের দমননীতির কারণে রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যেতে ভয় পাচ্ছে—এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “তাদের বাংলাদেশে একীভূত করা কোনো সমাধান নয়। স্থানীয় জনগণের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, কারণ তারা দেখছে, আন্তর্জাতিক সহায়তা কেবল রোহিঙ্গাদের জন্যই আসছে। এতে বৈষম্য ও সামাজিক অস্থিরতা বাড়ছে।”
তিনি আবারও পুনর্ব্যক্ত করেন, “আমাদের অনেক অভ্যন্তরীণ সমস্যা রয়েছে। তাই আমরা নতুন করে কোনো দীর্ঘমেয়াদি বোঝা নিতে পারি না।”
১১৬ বার পড়া হয়েছে