মার্কিন হামলায় যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বিভক্তি

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বিমান হামলার ঘোষণার পরপরই কংগ্রেসনাল নেতারা প্রকাশ্যে ভিন্নমত পোষণ করেন। রিপাবলিকানদের একাংশ হামলাকে “সঠিক সিদ্ধান্ত” বলে সমর্থন জানালেও, ডেমোক্র্যাট এবং কিছু রিপাবলিকান সাংসদ একে অসাংবিধানিক ও বিপজ্জনক বলে অভিহিত করেছেন।

রিপাবলিকান পার্টির সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম, সিনেটর জন করনিন, স্পিকার মাইক জনসনসহ অনেকেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে “সাহসী ও সঠিক” বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাদের মতে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের জন্য হুমকি, তাই এই হামলা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।

তবে রিপাবলিকানদের মধ্যেই ভিন্নমত রয়েছে। কেন্টাকির রিপাবলিকান টম ম্যাসি হামলাকে অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া এমন হামলা গ্রহণযোগ্য নয়।” রিপাবলিকান পার্টির ভেতরে ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ (MAGA) ঘরানার নেতাদের মধ্যে যুদ্ধবিরোধী মনোভাবও স্পষ্ট, বিশেষ করে টাকার কার্লসন, মার্জোরি টেইলর গ্রিন, স্টিভ ব্যানন প্রমুখ প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছেন।

ডেমোক্র্যাটদের বড় অংশ প্রেসিডেন্টের একতরফা সামরিক পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। প্রতিনিধি সারা জ্যাকবস, জিম হাইমস, রো খান্না প্রমুখ একে নতুন যুদ্ধের দিকে টেনে নেওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এবং কংগ্রেসে যুদ্ধক্ষমতা সীমিত করার জন্য নতুন প্রস্তাব উত্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। সিনেটর ক্রিস মারফি, জ্যাক রিড, জোয়াকিন কাস্ত্রোসহ অনেকে কূটনৈতিক সমাধান ও উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন।

তবে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যেও কিছু নেতা ইসরায়েল ও প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন, বিশেষ করে ইরানকে “সন্ত্রাসের প্রধান পৃষ্ঠপোষক” আখ্যা দিয়ে।

সাম্প্রতিক জরিপ ও বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, মার্কিন জনমতও বিভক্ত—অনেকেই নতুন যুদ্ধের বিপক্ষে, আবার কেউ কেউ জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে হামলাকে সমর্থন করছেন। রিপাবলিকান পার্টির ভেতরে ট্রাম্পের নেতৃত্ব ও পররাষ্ট্র নীতিতে স্পষ্ট দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, যা আগামী নির্বাচনের রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে।