ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া, নিম্নবিত্তের নাগালের বাইরে স্বাদ-স্মৃতির মাছ

ভরা মৌসুমেও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে রয়েছে ‘স্বাদ-স্মৃতির’ এই মাছ। বাজারে প্রতিদিন ইলিশ আসছে, কিন্তু দাম না থাকায় বিক্রেতা আর ক্রেতার মধ্যে দরদামেই কেটে যাচ্ছে সময়।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে মতলব অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশ কিছু ইলিশ এসেছে, তবে বেশিরভাগই মাঝারি বা ছোট আকারের। বড় ইলিশের দেখা মিললেও তা হাতে গোনা। দাম এত চড়া যে অনেক ক্রেতাই পা বাড়িয়ে আবার পিছু হটছেন। কেউ কেউ অবশ্য দুই একটা ইলিশ কিনছেন, তাও কষ্টে।

মতলব দক্ষিণ বাজারের বিক্রেতা বিমল চন্দ্র দাস এবং এনায়েতনগরের প্রাণকৃষ্ণ দাস বলেন, গত এক সপ্তাহে বাজারে ইলিশ কিছুটা বেশি এসেছে ঠিকই, তবে বড় আকারের ইলিশ তুলনামূলক কম। ১ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ২,৫০০ থেকে ২,৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যেটা তাঁরা কিনেছেন ২,১০০–২,২০০ টাকা দরে।

বাজারে আরও দেখা গেছে ৭০০–৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১,৭০০–১,৮০০ টাকায়,
মাঝারি ও ছোট ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১,২০০–১,৫০০ টাকার মধ্যে।
এই দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় এক থেকে দেড় গুণ বেশি। ফলে প্রতিদিন বাজারে আসে গড়ে ২–২.৫ মণ ইলিশ, কিন্তু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২০–২৫ কেজি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্ধারিত মূল্য না থাকায় একেক সময় একেক দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ, যা ক্রেতাদের জন্য তৈরি করছে দ্বিধা ও হতাশা।

স্থানীয় এক ক্রেতা, মো. হোসেন বলেন,
“কয়েক দিন ধইরা বাজারে আইতাছি। ভাবলাম দুইটা ইলিশ কিনমু, কিন্তু দাম এমন হাই যে কিনতাই পারতাছি না। ইলিশ কিনলে বাড়ির অন্য জিনিস বাদ দিতামু ক্যামনে? এইবার মনে হয় পাতে ইলিশ জুটব না।”

মতলব উত্তর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস জানান, মেঘনায় এখন ইলিশের সরবরাহ কম, ফলে বাজারে দাম বেশি।
মতলব দক্ষিণ ও উত্তরের দুই ইউএনও বলেন, দাম নির্ধারণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। দ্রুত মূল্য নির্ধারণ হলে বাজারে কিছুটা ভারসাম্য আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।