মুহুরী নদীর ভাঙা বাঁধে জরুরি মেরামত শুরু ফেনীতে

শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫ ৯:০৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ফেনীর ফুলগাজীতে পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে মুহুরী নদীর ভাঙা বেড়িবাঁধে সংস্কারকাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে সদর ইউনিয়নের বণিকপাড়া এলাকায় ২০ মিটার ভাঙা অংশে জিওব্যাগ ও বালুর বস্তা ফেলে মেরামতের কাজ চলছে।
পাউবো ফেনীর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম জানিয়েছেন, বর্তমানে বৃষ্টিপাত কম এবং নদীর পানি হ্রাস পাওয়ায় ভাঙা অংশে দ্রুত কাজ করা সম্ভব হচ্ছে। আজ শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে প্রাথমিক মেরামত সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশের সিলোনিয়া নদীর ভাঙা অংশে সংস্কারকাজ শুরু করতে কিছুটা সময় লাগবে, কারণ সেখানে এখনও পানি প্রবাহ বেশি।
বৃহস্পতিবার রাতের ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে বণিকপাড়া ও গোসাইপুর এলাকায় মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এতে ফুলগাজী উপজেলার অন্তত ৯টি গ্রাম প্লাবিত হয় উত্তর বড়ইয়া, দক্ষিণ বড়ইয়া, বিজয়পুর, বণিকপাড়া, বসন্তপুর, জগৎপুর, গোসাইপুর, করইয়া ও নীলাক্ষী।
উত্তর বড়ইয়ার বাসিন্দা মরণ চন্দ্র বলেন, “রাতের বৃষ্টিতে বাড়িতে হঠাৎ পানি ঢুকে পড়ে, ঘরের সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। এখন পানি নামলেও আবারও এমন হলে আমরা কোথায় যাব?” স্থানীয় বাসিন্দা কবির আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, “প্রতিবছর বর্ষাকালে এমন ভাঙন হয়। পাউবো শুধু সাময়িক জোড়াতালি দেয়, কিন্তু টেকসই কোনো পদক্ষেপ নেয় না। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহরিয়া ইসলাম জানান, পাউবো বাঁধ মেরামতের কাজ করছে এবং উপজেলা প্রশাসনও তদারকিতে রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো দ্রুত চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাউবো ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার জনগণ প্রতিবছরের বন্যা দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবে।
এদিকে ফেনী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত) ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। নদীর পানি কিছুটা কমলেও নিম্নাঞ্চলের অনেক জায়গায় এখনও পানি জমে আছে। মুহুরী নদীর পানি বর্তমানে ৯ মিটার, যা বিপৎসীমার (১২.৫৫ মিটার) নিচে রয়েছে। আগামী কয়েক দিন ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ এখনও সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
১০৯ বার পড়া হয়েছে