ইসরাইল-ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি: দ্বিমুখী অবস্থান

শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫ ৭:২০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি জাতিসংঘে উপস্থাপিত একটি চার্টে দেখিয়েছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের ৭০% থেকে ৯০% পর্যন্ত অগ্রগতি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চূড়ান্ত ধাপ।
তিনি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং দাবি করেন, ইরান খুব দ্রুত পারমাণবিক বোমা তৈরির সক্ষমতা অর্জন করতে পারে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইরানের পারমাণবিক প্রচেষ্টা ইসরাইলের অস্তিত্বের জন্য সরাসরি হুমকি এবং এই হুমকি মোকাবিলায় সামরিক অভিযান ছাড়া তাদের সামনে আর কোনো বিকল্প নেই।
অন্যদিকে, ইসরাইল নিজেই তাদের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে কখনো প্রকাশ্যে কিছু স্বীকার করেনি বা অস্বীকারও করেনি। আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলের কাছে বর্তমানে ৮০ থেকে ৯০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে এবং আরও প্রায় ২০০টি ওয়ারহেড তৈরির মতো উপাদান মজুদ রয়েছে। দেশটি কোনো আন্তর্জাতিক পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে নেই এবং তাদের কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপও খুব কম। এই অবস্থাকে ‘কৌশলগত নীরবতা’ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
ইরান শুরু থেকেই দাবি করে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ এবং বেসামরিক উদ্দেশ্যে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ৬০% পর্যন্ত বাড়িয়েছে, যা অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মাত্রার কাছাকাছি।
আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) ও পশ্চিমা দেশগুলো এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইসরাইল সম্প্রতি ইরানের বিভিন্ন পারমাণবিক স্থাপনা ও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে, যাতে ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরা নিহত হন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানও ইসরাইলের ওপর হামলা চালিয়েছে, ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইল একদিকে অন্য দেশের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সরব, অন্যদিকে নিজেদের অস্ত্রভাণ্ডার নিয়ে নীরবতা বজায় রাখছে। এই দ্বিমুখী নীতি মধ্যপ্রাচ্যে পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা ও নিরাপত্তা সংকট আরও বাড়িয়ে তুলছে।
ইসরাইল ও ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে ইসরাইল নিজে গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র রাখলেও ইরানের কার্যক্রম নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সরব ভূমিকা রাখছে।
১২৯ বার পড়া হয়েছে