সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত বেড়েছে ৩৩ গুণ, প্রশ্ন তুলছে বিশ্লেষকরা

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৮ কোটি ৯৫ লাখ সুইস ফ্রাঁ। প্রতি সুইস ফ্রাঁর বিনিময় হার ১৪৯ টাকা ৬৯ পয়সা ধরলে, বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা। অথচ ২০২৩ সালে এই পরিমাণ ছিল মাত্র ১ কোটি ৭৭ লাখ সুইস ফ্রাঁ, অর্থাৎ মাত্র ২৬৪ কোটি টাকা।

এই বিশাল উল্লম্ফনের কোন কারণ উল্লেখ করেনি সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২৪ সালে শেখ হাসিনার সরকারবিরোধী ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলন এবং ক্ষমতা হারানোর শঙ্কা অনেকের মধ্যে দেখা দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, এই রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার জের ধরেই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগে ২০২১ সালে বাংলাদেশিদের আমানতের পরিমাণ ছিল ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ, যা ছিল এযাবৎকালের সর্বোচ্চ। এরপরের দুই বছরে সেই অর্থ দ্রুত কমে যায়, প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়, যা সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছে।

এসএনবি জানিয়েছে, যেসব বাংলাদেশি নাগরিক বিদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে অথবা নাগরিকত্ব গোপন রেখে অর্থ জমা রেখেছেন, তাদের হিসাব এই প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এছাড়া জমাকৃত স্বর্ণ বা মূল্যবান সামগ্রীর আর্থিক মূল্যও এখানে বিবেচনা করা হয়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্বব্যাপী সুইস ব্যাংকিং গোপনীয়তা কমে আসায় এখন অনেক ধনী ব্যক্তি অবৈধ অর্থ জমা রাখার জন্য লুক্সেমবার্গ, কেম্যান আইল্যান্ড, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, বারমুডাসহ অন্যান্য ট্যাক্স হ্যাভেনগুলোর দিকে ঝুঁকছেন।