পটুয়াখালীতে আধা কিলোমিটার রাস্তার অভাবে ঘুরতে হচ্ছে ১০ কিলোমিটার, দূর্ভোগে বাসিন্দারা

বৃহস্পতিবার , ১৯ জুন, ২০২৫ ৮:০৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
পটুয়াখালী জেলার সদরের মাদারবুনিয়া ও ছোট বিঘাই ইউনিয়নের তুশখালী ও নন্দীপাড়া গ্রামের মাঝে মাত্র আধা কিলোমিটার রাস্তার অভাবে প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয় স্থানীয় প্রায় ৫০ হাজার মানুষের।
দীর্ঘ দিন ধরে চলা এই দুর্ভোগের কথা জানিয়ে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয়রা বলেন, দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসলেও আমাদের এই রাস্তায় আজও উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন চেয়ারম্যান-এমপি আসলেও, কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে, রাস্তার এই অবস্থা অজানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত রয়েছে।
জানা যায়, সদর উপজেলার ছোট বিঘাই ইউনিয়নের তুষখালী ডা. কাজী মজিবর রহমান হাফিজিয়া মাদ্রাসা, এতিমখানা ও ত্রিভাষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে প্রায় আধা কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা রয়েছে, যা ব্রিটিশ আমল থেকেই সরকারী খাস হালটে অন্তর্ভুক্ত। তবে, স্বাধীনের পর থেকে এই রাস্তার উন্নয়নের জন্য কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি। ফলে, এই রাস্তার জমি বেদখল হওয়ার পাশাপাশি, রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নেয়া হয়নি।
এই রাস্তা নির্মাণ হলে, এই দুই ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ ও স্থানীয় শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন। পাশাপাশি, এলাকার প্রায় ৩ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য চলাচল সহজ হবে। উল্লেখ্য, এই অঞ্চলের স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা জেলা শহর পটুয়াখালীতে যেতে ১ থেকে ২ ঘণ্টা সময় ব্যয় করে থাকেন, যদিও রাস্তার দূরত্ব মাত্র আধা ঘণ্টার। বর্ষাকালে কাঁদা আর মাটির কারণে শিক্ষার্থীদের স্কুলের পোশাক নষ্ট হয়ে যায়, যা আরও দুর্ভোগের কারণ হয়। কৃষিপ্রধান এই এলাকায় কৃষকরা তাদের পণ্য বাজারে আনা-নেওয়ায়ও সমস্যায় পড়েন।
অন্যদিকে, তুষখালী গ্রামের বাসিন্দারা নিজ উদ্যোগে রাস্তা নির্মাণের জন্য মাটি ফেলে কাজ শুরু করেছেন। তবে, এই কাজের জন্য দরকার সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা। স্থানীয়রা অনুরোধ জানিয়ে বলেন, রাস্তা নির্মাণে সরকারের সহায়তা প্রয়োজন, যাতে এই দুর্ভোগের অবসান ঘটে।
অবসরপ্রাপ্ত কর কমিশনার ডা. কাজী আবু হেনা জাফর বলেন, “এই রাস্তার জন্য সরকার উদ্যোগ নিলেই আমরা গ্রামবাসীরা সম্পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। প্রয়োজন হলে, খাস জমি ছাড়া ২-১ ফুট জমি ছাড়তেও রাজি আছি। তবে, দ্রুত রাস্তার নির্মাণ চাই।”
সাধারণ মানুষের পাশাপাশি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও এ ব্যাপারে মতামত দেন। এরা সবাই একযোগে দাবি করেন, দ্রুত এই রাস্তা নির্মাণের মাধ্যমে এলাকার উন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
পটুয়াখালী সদর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এই মুহূর্তে রাস্তার জন্য কোনো টেন্ডার হয়নি; তবে, ভবিষ্যতে নতুন প্রকল্প আসলে, এই রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, এই রাস্তাটির নির্মাণ হলে, এলাকার শিক্ষা, কৃষি, ব্যবসা ও সাধারণ যাতায়াতের ক্ষেত্রে ব্যাপক সুবিধা হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন স্থানীয় সচেতন জনগণ ও এলাকাবাসী।
১৭৯ বার পড়া হয়েছে