পাক সেনাপ্রধানের সাক্ষাতের আগে মোদী-ট্রাম্প ফোন

ফোনালাপের সময় ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক উত্তেজনা, সন্ত্রাসবাদ, এবং ভারত-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক উঠে আসে।

মোদী ট্রাম্পকে স্পষ্টভাবে জানান যে, সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে সামরিক সংঘর্ষের অবসান হয়েছে, তা সরাসরি দুই দেশের সেনাবাহিনীর বিদ্যমান চ্যানেলের মাধ্যমে পাকিস্তানের অনুরোধে হয়েছে—এতে যুক্তরাষ্ট্র বা কোনো তৃতীয় পক্ষের কোনো মধ্যস্থতা ছিল না। মোদী বলেন, ভারত কখনোই তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা গ্রহণ করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না।
মোদী বিস্তারিতভাবে ‘অপারেশন সিন্ধুর’ (Operation Sindoor) বিষয়ে ট্রাম্পকে অবহিত করেন; তিনি বলেন, এটি ছিল পাল্টা প্রতিক্রিয়া, এবং ভারতের প্রতিক্রিয়া ছিল ‘পরিমিত, নির্ভুল ও উত্তেজনা না-বাড়ানো’ ধরনের।
মোদী ট্রাম্পকে বলেন, পাকিস্তানের গুলির জবাব ভারত ‘গোলায়’ দেবে—অর্থাৎ, ভারত এখন থেকে সন্ত্রাসবাদকে যুদ্ধ হিসেবে দেখবে, ‘প্রক্সি ওয়ার’ হিসেবে নয়।

ট্রাম্পের দাবি ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এবং বাণিজ্যিক চাপের কারণে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি হয়েছে; মোদী স্পষ্টভাবে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন, কোনো পর্যায়ে কোনো বাণিজ্য চুক্তি বা মধ্যস্থতা নিয়ে আলোচনা হয়নি।
মোদী জানান, পাকিস্তানের সামরিক হামলার পর ভারত পাল্টা হামলায় পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনা ও বিমানঘাঁটিগুলো অকার্যকর করে দেয়, যার ফলে পাকিস্তানই যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানায়।

ফোনালাপের সময় ট্রাম্প মোদীকে আমেরিকায় যাত্রাবিরতির আমন্ত্রণ জানালেও মোদী পূর্বনির্ধারিত সূচির কারণে তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং পরিবর্তে ট্রাম্পকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান, বিশেষ করে আসন্ন QUAD সম্মেলনের জন্য।

পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের আগে মোদী-ট্রাম্প ফোনালাপে ভারত তার অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়—সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া, তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান, এবং দ্বিপাক্ষিক সামরিক চ্যানেলের মাধ্যমে সংঘর্ষ নিরসনের বিষয়টি। মোদীর এই কূটনৈতিক কৌশল ভারতের আত্মবিশ্বাসী ও স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতিরই প্রতিফলন।