ফরদো পারমাণবিক স্থাপনা: ধ্বংস করা কি সত্যিই অসম্ভব !

বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫ ৭:২৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ইরানের ফরদো পারমাণবিক স্থাপনাটি কোম শহরের কাছে একটি পাহাড়ের গভীরে গড়ে তোলা হয়েছে।
এটি মূলত পাঁচটি সুড়ঙ্গ দিয়ে পাহাড়ের নিচে প্রবেশযোগ্য এবং প্রবল নিরাপত্তাব্যবস্থার আওতায় রয়েছে। মাটির প্রায় ৮০ থেকে ৯০ মিটার গভীরে অবস্থিত এই কেন্দ্রে আকাশপথে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করা প্রায় অসম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
২০০৯ সালে এই কেন্দ্রের অস্তিত্ব প্রথমবার প্রকাশ্যে আসে, যখন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের নেতারা যৌথভাবে এক ঘোষণায় এর তথ্য জানান। সেই সময় প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেছিলেন, ফরদোর আকার-গঠন কোনো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
২০১৮ সালে ইসরায়েলের দাবি অনুযায়ী, তারা ইরানের ‘পারমাণবিক আর্কাইভ’ থেকে বিপুলসংখ্যক গোপন নথি উদ্ধার করেছে। এতে ফরদোর বিস্তারিত নকশা এবং পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির লক্ষ্যের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়। বিশ্লেষক ডেভিড আলব্রাইট বলেন, এসব নথি যাচাই করে প্রমাণিত হয়েছে, ইরান হয়তো প্রতিবছর একটি বা দুটি পারমাণবিক বোমা তৈরির সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছিল।
ইরান অবশ্য এসব অভিযোগকে বরাবরই অস্বীকার করে আসছে, দাবি করছে তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে।
২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ‘জেসিপিওএ’ চুক্তি অনুযায়ী ফরদো থেকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের বেশির ভাগ যন্ত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেলে ইরান আবার কর্মসূচি জোরদার করে।
সাম্প্রতিক আইএইএ রিপোর্ট অনুযায়ী, ফরদোতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এখন ৬০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে, যেখানে রয়েছে প্রায় ২,৭০০টি সেন্ট্রিফিউজ। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, এই হার আরও বাড়িয়ে খুব অল্প সময়েই অস্ত্রমান ইউরেনিয়াম তৈরি করা সম্ভব, যা কয়েকটি পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য যথেষ্ট।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফরদোর অবস্থান এতটাই গভীরে যে, এটি ধ্বংস করতে হলে অত্যন্ত শক্তিশালী বোমা এবং একাধিক নির্ভুল আঘাতের প্রয়োজন হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে থাকা জিবিইউ-৫৭/বি বোমাও একবারে সফল হতে পারে না বলে মনে করা হচ্ছে। একাধিকবার ঠিক একই স্থানে আঘাত করলেই কেবল কিছুটা ফল পাওয়া যেতে পারে।
ইসরায়েলের কর্মকর্তারা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র চাইলে এই হামলা সম্ভব, তবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকেই।
১১৯ বার পড়া হয়েছে