হাইপারসনিক ফাতাহ মিসাইল নিক্ষেপ
ইরান-ইসরাইলের আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পাল্টাপাল্টি দাবি

বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫ ৩:২০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে সামরিক সংঘাতের জেরে আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শুরু হয়েছে পাল্টাপাল্টি দাবি।
দুই দেশের সামরিক বাহিনী একে অপরের রাজধানী ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরাইলের আকাশসীমা পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে; অন্যদিকে ইসরাইলও ইরানের আকাশে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পাল্টা দাবি করছে।
১৭ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার রাত থেকে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (IRGC) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা শক্তিশালী ফাতাহ মিসাইলের মাধ্যমে ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা বলয় ভেঙে ফেলেছে এবং ইসরাইলের আকাশসীমা এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইসরাইলি জনগণ এখন ইরানের হামলার বিপরীতে সম্পূর্ণ অরক্ষিত।
১৬ জুন ২০২৫, সোমবার, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন দাবি করেন, তারা ইরানের রাজধানী তেহরানের আকাশে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে এবং ইরানের এক-তৃতীয়াংশ ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার ধ্বংস করেছে। ইসরাইলি যুদ্ধবিমান ও ড্রোন বর্তমানে কোনো বাধা ছাড়াই তেহরান পর্যন্ত পৌঁছাতে পারছে বলে জানানো হয়।
১৭ জুন রাত থেকে ইরান ও ইসরাইল পরস্পরের রাজধানী লক্ষ্য করে দফায় দফায় হামলা চালাচ্ছে। তেহরানে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় একাধিক বিস্ফোরণ হয়েছে এবং নতুন করে ৪৫ জন নিহত হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় কেরমানশাহ প্রদেশের একটি হাসপাতালেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে।
পাল্টা জবাবে, ইরান ইসরাইলের হাইফা ও তেলআবিবে বড় পরিসরে ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালিয়েছে। এতে রাজধানীসহ আশপাশের অঞ্চলে ব্যাপক বিস্ফোরণ ঘটে এবং বহু আবাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শুক্রবার থেকে চলমান হামলায় ২৪ ইসরাইলি নিহত এবং ইরানে আড়াইশ’র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরাইলের একটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। অন্যদিকে, ইসরাইল দাবি করেছে, তারা ইরানের সামরিক অবকাঠামো ও বিমানঘাঁটিতে বড় ধরনের ক্ষতি করেছে।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল আবদুররহিম মুসাভি তেলআবিব ও হাইফার বাসিন্দাদের যত দ্রুত সম্ভব সরিয়ে নিতে বলেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, ‘সবারই অবিলম্বে তেহরান ত্যাগ করা উচিত’। ইসরাইলও তেহরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছে।
আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ইরান ও ইসরাইলের পাল্টাপাল্টি দাবি মূলত মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের অংশ। দুই পক্ষই নিজেদের সামরিক সক্ষমতা ও মনোবল প্রদর্শনের জন্য এই বিবৃতি দিচ্ছে। বাস্তবে কোনো পক্ষই পুরোপুরি প্রতিপক্ষের আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয়েছে—এমন নিরপেক্ষ প্রমাণ নেই।
১২৩ বার পড়া হয়েছে