সর্বশেষ

সারাদেশ

চলনবিলে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫ ৯:০৬ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাগুড়াবিনোদ এলাকার কৃষক মো. আজগার আলী সাত বিঘা জমিতে ব্রি-২৯ জাতের বোরো ধানের চাষ করেছিলেন।

পরিকল্পনা ছিল, ঈদের পরপরই ধান কেটে ঘরে তোলা হবে। কিন্তু হঠাৎ করে উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বর্ষণে জমিগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন শুধু তিনি নন, তার মতো অসংখ্য কৃষক চোখের সামনে পাকা ধান ডুবে যেতে দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

কেউ কেউ কোমরসমান পানিতে দাঁড়িয়ে চড়া দামে শ্রমিক ভাড়া করে বা নিজেরাই পলিথিনের নৌকা বানিয়ে ধান তোলার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাতেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেক কৃষক শ্রমিক না পাওয়ার কারণে এক মুঠো ধানও তুলতে পারছেন না।

যারা আগাম জাতের বোরো ধান চাষ করেছিলেন, তারা সৌভাগ্যক্রমে বন্যার আগেই ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন। বিপাকে পড়েছেন মূলত নাবি জাতের চাষিরা, যারা একটু দেরিতে আবাদ করেছিলেন।

সরেজমিনে তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, নাটোরের সিংড়া, গুরুদাসপুর, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়াসহ চলনবিল এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠে দেখা গেছে হাজার হাজার বিঘা জমির ধান পানির নিচে। আধাপাকা কিংবা সম্পূর্ণ পাকা ধান তলিয়ে আছে কোথাও বা মাথা জাগিয়ে রেখেছে। কিন্তু পানির গভীরতায় মেশিন (হারভেস্টার) ব্যবহার সম্ভব নয়, আবার শ্রমিক সংকটও প্রকট।

ঘরগ্রাম এলাকার কৃষক ইসমাইল হোসেন জানান, শুধু তাড়াশ নয়, আশপাশের ইউনিয়নগুলোতেও একই চিত্র। “আমরা এখন ঈদ ভুলে গেছি, একমাত্র চিন্তা জমির ধান কিছুটা হলেও ঘরে তুলতে পারবো কি না।”

সগুনা ইউনিয়নের আবু হাশিম বলেন, “এ বছর ধান পাকতে দেরি হয়েছে। তার ওপর জ্যৈষ্ঠের শুরুতেই এমন আকস্মিক বন্যা! আমাদের চোখের সামনে কষ্টের ফসল পানিতে ডুবে যাচ্ছে।”

অন্যদিকে কুন্দইল গ্রামের আয়নাল মণ্ডল জানালেন, “পানিতে দাঁড়িয়ে ধান কাটতে শ্রমিক পাচ্ছি না। যারা আসছেন, তারা বিঘা প্রতি ৯৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক নিচ্ছেন। হারভেস্টার মিললেও সেটা চলছে না পানির জন্য। দিন হাজিরা শ্রমিকদেরও মজুরি ১১০০-১২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে।”

চলনবিলের আট উপজেলার অন্তত ১৫-২০টি ইউনিয়নের কৃষকদের মধ্যে চলছে চরম হতাশা। সোমবার বিকাল পর্যন্ত পানি আরও বেড়েছে। পাকা ধান বাঁচাতে না পেরে অনেকে চোখের জল ফেলছেন।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “প্রকৃতির ওপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে আমরা কৃষকদের পাশে আছি, যতটুকু সম্ভব ধান রক্ষায় তাদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

১০৭ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
এলাকার খবর

বিজ্ঞাপন

৩০০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ সব খবর
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন