ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা সতর্কবার্তা

মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫ ৪:৪৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
১৩ জুন ২০২৫ তারিখে ইসরায়েল ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনায় আক্রমণ চালায়, যার মধ্যে নাতাঞ্জ, ইস্পাহান ও ফোর্দো স্থাপনাগুলো উল্লেখযোগ্য।
এই হামলার ফলে নাতাঞ্জের পাইলট ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্ল্যান্টের উপরের অংশ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয় এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে, ভূগর্ভস্থ মূল স্থাপনায় সরাসরি হামলার প্রমাণ মেলেনি, যদিও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সেন্ট্রিফিউজ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
IAEA (International Atomic Energy Agency) আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি ১৬ জুন ২০২৫ ভিয়েনায় সংস্থার বোর্ড সভায় জানান, হামলার ফলে এখন পর্যন্ত কোনো গুরুতর তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানোর ঘটনা ঘটেনি এবং সাধারণ জনগণ ও পরিবেশে কোনো বড় ধরনের প্রভাব পড়েনি। তিনি বলেন, “সামরিক উত্তেজনা মানুষের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে, রেডিওলজিক্যাল রিলিজের ঝুঁকি বাড়ায় এবং কূটনৈতিক সমাধানের পথকে বাধাগ্রস্ত করে”। গ্রোসি সকল পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানান এবং বলেন, সংলাপ ও কূটনৈতিক সমাধানই একমাত্র টেকসই পথ।
যুক্তরাষ্ট্রের মতে, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও মজুতকরণ আন্তর্জাতিক উদ্বেগের কারণ, এবং ইরানের বর্তমান কর্মসূচির কোনো বেসামরিক যুক্তি নেই। ইইউ কূটনৈতিক সমাধান ও সংযমের ওপর জোর দিয়েছে এবং পরমাণু স্থাপনার নিরাপত্তা ও IAEA-এর পর্যবেক্ষণ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ইরানের ৬০% ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণকে নজিরবিহীন ও উদ্বেগজনক বলে আখ্যা দিয়েছে এবং IAEA-এর স্বাধীন পর্যবেক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।
হামলার ফলে পরমাণু স্থাপনার নিরাপত্তা ও সুরক্ষার ওপর গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলা হলে তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানোর ঝুঁকি আরও বাড়বে। সামরিক উত্তেজনা ও পারস্পরিক অবিশ্বাস কূটনৈতিক সমাধানকে বাধাগ্রস্ত করছে, যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি। সংস্থাটি ইরানের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
ইরানের পরমাণু স্থাপনায় সাম্প্রতিক হামলা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। IAEA চিফ রাফায়েল গ্রোসি স্পষ্টভাবে বলেছেন, “পরমাণু স্থাপনায় হামলা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয় এবং কেবল সংলাপ ও কূটনৈতিক সমাধানই টেকসই পথ”। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত সর্বোচ্চ সংযম দেখানো এবং IAEA-এর সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা নিশ্চিত করা, যাতে আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় থাকে।
১৩১ বার পড়া হয়েছে