তেহরান ছাড়ার নির্দেশ ট্রাম্পের, যুদ্ধের আশঙ্কায় বিশ্ব

মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫ ৪:২৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ পঞ্চম দিনে পৌঁছেছে। এই সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হঠাৎ সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দেন: “সবাইকে এখনই তেহরান ছেড়ে যেতে হবে!”—যা তেহরানজুড়ে আতঙ্ক ছড়ায় এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় আলোড়ন তোলে।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে তেহরানের ৩ লাখ বাসিন্দাকে সরিয়ে নিতে সতর্ক করেছে এবং শহরের কিছু অংশে সরাসরি বিমান হামলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি যুদ্ধ জড়ানোর ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।
ট্রাম্পের হুমকি কি যুদ্ধের বার্তা দিচ্ছে, নাকি চাপের কৌশল? ট্রাম্প বারবার বলেছেন, “ইরান পারমাণবিক অস্ত্র পেতে পারে না… সবাই তেহরান ছেড়ে যান!”। তিনি দাবি করেছেন, ইরান তার প্রস্তাবিত চুক্তি মেনে নিলে এই প্রাণহানি এড়ানো যেত। ইসরায়েলি হামলার পটভূমিতে এই বার্তা এসেছে, তবে মার্কিন প্রশাসন বারবার বলছে, যুক্তরাষ্ট্র এখনও সরাসরি যুদ্ধে নামেনি। হোয়াইট হাউস, প্রতিরক্ষা দপ্তর ও প্রেস সেক্রেটারি স্পষ্ট জানিয়েছেন, “আমেরিকান বাহিনী প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে আছে, সরাসরি যুদ্ধে নেই”। ট্রাম্প নিজেও বলেছেন, “আমরা এখনো জড়িত নই, তবে ভবিষ্যতে হতে পারি”। কংগ্রেসে একাধিক আইনপ্রণেতা (যেমন বার্নি স্যান্ডার্স, থমাস ম্যাসি) যুদ্ধবিরোধী বিল তুলেছেন, যাতে প্রেসিডেন্টের একক সিদ্ধান্তে যুদ্ধ শুরু ঠেকানো যায়।
ইসরায়েল চাইছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের সাথে যৌথভাবে ইরানের গোপন পারমাণবিক স্থাপনা (যেমন ফোর্দো) ধ্বংস করুক, যেটা শুধুমাত্র মার্কিন ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমার সাহায্যে সম্ভব। ট্রাম্প প্রশাসন এখনো সরাসরি হামলায় সম্মতি দেয়নি, তবে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডেকেছে—যা যুদ্ধের সম্ভাবনা বাড়িয়েছে। ইরান হুমকি দিয়েছে, মার্কিন বাহিনী হামলায় জড়ালে চুক্তির সব দরজা বন্ধ হয়ে যাবে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলরসহ জি-৭ নেতারা যুদ্ধ থামাতে কূটনৈতিক উদ্যোগের কথা বলছেন।কিন্তু ট্রাম্পের হঠাৎ জি-৭ সম্মেলন ছেড়ে কানাডা থেকে চলে যাওয়া ও জাতীয় নিরাপত্তা বৈঠক ডাকা যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়িয়েছে, যদিও কিছু সূত্র বলছে, এটি হয়তো যুদ্ধ নয়, বরং যুদ্ধবিরতির আলোচনা।
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি যুদ্ধের সরাসরি ঘোষণা নয়, বরং কূটনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক চাপের অংশ। তবে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত যে, সামান্য উসকানিতেই যুক্তরাষ্ট্র সামরিকভাবে জড়িয়ে পড়তে পারে, বিশেষ করে যদি ইরান মার্কিন স্বার্থে আঘাত হানে বা ইসরায়েল মার্কিন সহায়তা ছাড়া পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংসে ব্যর্থ হয়। এখনো পর্যন্ত, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান: “যুদ্ধ চাই না, তবে প্রয়োজনে প্রস্তুত।”
১৩১ বার পড়া হয়েছে