গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে দ্য হেগে জনতার বিস্ফোরণ

সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫ ১০:৩০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করে নেদারল্যান্ডস সরকারের নির্লিপ্ত অবস্থানের বিরুদ্ধে রোববার (১৫ জুন) দ্য হেগ শহরে লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে আসে।
'রেড লাইন' নামে আয়োজিত এই বিক্ষোভে অংশ নেন অন্তত দেড় লাখ মানুষ, যা ছিল অভূতপূর্ব ও ঐতিহাসিক।
বিক্ষোভকারীরা মিছিল করে পৌঁছান আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের সামনে যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা গণহত্যার মামলার শুনানি চলছে। মামলার কেন্দ্রে রয়েছে গাজায় ইসরায়েলের টানা সামরিক হামলা, যা দক্ষিণ আফ্রিকা ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ হিসেবে তুলে ধরেছে।
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও অক্সফ্যামসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠন এই প্রতিবাদের অন্যতম আয়োজক। তাদের বক্তব্য, এই প্রতীকী ‘রেড লাইন’ আন্দোলনের মাধ্যমে তারা দেখাতে চেয়েছেন—নেদারল্যান্ডস সরকার এখনো ইসরায়েলের আগ্রাসন থামাতে কোনো কার্যকর অবস্থান নেয়নি।
বিক্ষোভকারীরা গান, কবিতা ও ব্যানার-প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে গাজার পক্ষে তাদের সংহতি প্রকাশ করেন। কেউ কেউ নিহত ফিলিস্তিনি শিশুদের ছবি বহন করে মিছিল করেন, যা দর্শকদের চোখে জল এনে দেয়।
নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কোফ আন্দোলনকারীদের এই গণসমাবেশকে ‘অসাধারণ গণজাগরণ’ বলে উল্লেখ করে বলেন, “এত বিশালসংখ্যক মানুষ যেভাবে তাদের মানবিক অনুভূতি প্রকাশ করেছেন, তা আমরা দেখেছি ও শুনেছি। গাজায় সংকট নিরসনে আমরা প্রতিটি স্তরে কাজ করে যাচ্ছি।”
বিক্ষোভকারীরা শুধু গাজায় ইসরায়েলের হামলাই নয়, ইরানে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলারও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আল জাজিরার সাংবাদিক স্টেপ ভ্যাসেন জানিয়েছেন, “ইসরায়েল যতই কৌশল ও প্রচারণা চালাক, মানুষ গাজার গণহত্যার মূল ইস্যু থেকে চোখ সরাচ্ছেন না।”
নেদারল্যান্ডসের প্রতিবাদ একক নয়। একই দিন বেলজিয়াম, তুরস্ক, ব্রাজিল ও গ্রিসেও ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ হয়েছে। দিন দিন এই আন্দোলন বিশ্বব্যাপী আরও বিস্তৃত হচ্ছে।
ইসরায়েলের টানা হামলায় গাজায় গত ২০ মাসে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৫৫ হাজার ৩০০ ফিলিস্তিনি। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই মৃত্যুপুরীতে শিশু ও নারীদের সংখ্যাই বেশি। যুদ্ধ থামাতে এখন দরকার সাহসী ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়া।
১২৩ বার পড়া হয়েছে