সন্তান প্রসব করিয়ে প্রশংসিত “গরিবের ডেলিভারি ডাক্তার” শামসুন্নাহার

সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫ ৮:৫৮ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ঈদের ছুটিতেও চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রেখে প্রশংসিত হয়েছেন মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উলাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা শামসুন্নাহার।
পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির মাঝেও এক প্রসূতির সফল স্বাভাবিক সন্তান প্রসব করিয়ে স্থানীয়দের কাছে তিনি এখন “গরিবের ডেলিভারি ডাক্তার” হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ৯ জুন। উপজেলার দড়িকয়ড়া গ্রামের আবুল হোসেনের স্ত্রী বিলকিস আক্তারের প্রসব ব্যথা উঠলে তার স্বজনরা ফোন করেন শামসুন্নাহারকে। ছুটির মধ্যেও তাৎক্ষণিক সাড়া দিয়ে তিনি প্রসূতিকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসার নির্দেশ দেন। পরে একাই নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে নিরাপদে কন্যা সন্তানের স্বাভাবিক প্রসব করান তিনি।
এ বিষয়ে শামসুন্নাহার বলেন, “ঈদের ছুটিতে ছিলাম, কিন্তু খবর পেয়েই সাড়া দিয়েছি। দায়িত্ব শুধু চাকরি নয়, এটা আমার মানবিক কর্তব্য। মা ও নবজাতক দুজনেই সুস্থ আছেন—এটাই সবচেয়ে বড় আনন্দ।”
তিনি আরও বলেন, “একজন শিশু যখন পৃথিবীতে আসে, তখন যে আনন্দ পাই, তা কোনো ছুটির আনন্দের সঙ্গে তুলনীয় নয়। ঈদের আনন্দের চেয়ে বড় ঈদ হলো একজন প্রসূতির পাশে থেকে তাকে নিরাপদ প্রসবে সহায়তা করা।”
ঘটনার সঙ্গে যুক্ত অন্য স্বাস্থ্যসেবিকারাও জানান, এ ধরনের কাজে মানসিক তৃপ্তি ও ভালোবাসা কাজ করে। সহকারী পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা লক্ষ্মী রানী দাস বলেন, “একজন মাকে সুস্থ রেখে সন্তান জন্ম দিতে সাহায্য করা আমাদের কাজের সবচেয়ে আনন্দময় দিক।”
পরিবার কল্যাণ সহকারী কামরুন্নাহার শেলী জানান, “ছুটির মধ্যে সফল ডেলিভারি আমাদের মন ভালো করে দিয়েছে। শামসুন্নাহার আপার দক্ষতার জন্য এলাকাবাসীর মধ্যে তার আলাদা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।”
সহকারী সালমা নার্গিস বলেন, “মাঠ পর্যায়ে আমরা গর্ভবতী নারীদের সাহস দিই, পাশে থাকি। সন্তান প্রসবের সময় সহযোগিতা করতে পারা আমাদের দায়িত্ব ও ভালোবাসার প্রকাশ।”
এ বিষয়ে উলাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মো. পারভেজ মিয়া বলেন, “ছুটির দিনেও আমাদের কেন্দ্রে সন্তান প্রসব হয়েছে, এটা আমাদের জন্য আনন্দের। এখানে কর্মরত স্বাস্থ্যসেবিকারা অত্যন্ত দায়িত্বশীল ও সেবাপ্রিয়। এলাকাবাসীর আস্থা অর্জন করতে পেরেছে আমাদের এই কেন্দ্র।”
১২৬ বার পড়া হয়েছে