আদানীর ইসরাইলে হাইফা বন্দর, প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ: নতুন সংকটে

সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫ ২:০৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ভারতের আদানী গ্রুপের ইসরাইলে উচ্চাভিলাষী বিনিয়োগ এখন চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
হাইফা বন্দর, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি এবং সেমিকন্ডাক্টর খাতে বিনিয়োগ—সবকিছুই মধ্যপ্রাচ্যের নতুন ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
২০২৩ সালে আদানী গ্রুপ ইসরায়েলের গাদোট গ্রুপের সঙ্গে যৌথভাবে হাইফা বন্দরের ৭০% মালিকানা $১.২ বিলিয়ন ডলারে অধিগ্রহণ করে। বন্দরটি ইসরায়েলের আমদানি-রপ্তানির ৩০% এর বেশি পরিচালনা করে এবং ইউরোপ-এশিয়া বাণিজ্যিক প্রবাহের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।
তবে ইরান-ইসরায়েল সাম্প্রতিক সংঘাতের ফলে বন্দর হামলায় কার্যক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ভবিষ্যতে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের আশঙ্কায় ঝুঁকি বেড়েছে।
কার্গো ডিলে, শিপিং রিরাউট, বিমা খরচ বৃদ্ধি এবং অপারেশনাল চ্যালেঞ্জের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
হাইফা বন্দর আদানী পোর্টসের মোট কার্গো ভলিউমের ২-৩% এবং আয়ের ৫% অবদান রাখে, কিন্তু এর কৌশলগত ও প্রতীকী গুরুত্ব অনেক বেশি।
ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বন্দরের বিশেষ কোনো ক্ষতি হয়নি, তবে বাজারে ঝুঁকির কারণে আদানী পোর্টসের শেয়ার ৩-৪% পর্যন্ত পড়ে গেছে।
ঋণ পরিশোধ ও পুনঃঅর্থায়ন নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, কারণ ২০২৫ সালের জুনে বড় অঙ্কের ঋণ পরিশোধযোগ্য।
২০১৮ সালে আদানী এন্টারপ্রাইজ ইসরায়েলের এলবিট সিস্টেমসের সঙ্গে যৌথভাবে হায়দরাবাদে ড্রোন (Hermes 900 UAV) উৎপাদন শুরু করে, যা ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।
চলমান সংঘাতে ড্রোনের চাহিদা বাড়তে পারে, তবে যুদ্ধকালীন অস্থিরতা ও সরবরাহ চেইন বিঘ্নিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
প্রতিরক্ষা খাতে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও মানবাধিকার ইস্যুতে বাড়তি চাপের মুখে পড়তে পারে আদানী-এলবিট অংশীদারিত্ব।
আদানী গ্রুপ ইসরায়েলের টাওয়ার সেমিকন্ডাক্টরের সঙ্গে $১০ বিলিয়ন মূল্যের সেমিকন্ডাক্টর প্রকল্পের আলোচনা করছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক অস্থিরতা ও বাজারের অনিশ্চয়তায় এই প্রকল্প আপাতত স্থগিত রয়েছে।
আদানী গ্রুপের ইসরাইলে বিনিয়োগ এখন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে। হাইফা বন্দর, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ও সেমিকন্ডাক্টর—সব খাতেই ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা, ঋণচাপ, এবং বাজারের প্রতিক্রিয়ায় নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আদানীর এই উচ্চাভিলাষী বিনিয়োগগুলো ঝুঁকির মধ্যেই থাকবে।
১২১ বার পড়া হয়েছে