ইসরাইল-ইরান উত্তেজনা চরমে: তেহরানের আকাশে আধিপত্যের ঘোষণা নেতানিয়াহুর, বড় ধরনের হামলার আশঙ্কা

রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫ ২:৩৩ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন, “খুব শীঘ্রই তেহরানের আকাশে ইসরাইলি যুদ্ধবিমান দেখা যাবে,” এবং সরকারি ও সামরিক সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বড় ধরনের হামলার হুমকি দিয়েছেন। এই ঘোষণার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সামরিক প্রস্তুতি ও পাল্টাপাল্টি হামলার আশঙ্কা বেড়েছে।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে। সাম্প্রতিক ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বিমানবাহিনী (IAF) ৭০টি যুদ্ধবিমান দিয়ে অন্তত ৪০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। ইসরাইল দাবি করেছে, তারা আকাশে পূর্ণ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে এবং ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরাইলের ডিফেন্স ক্যাপাসিটি (Iron Dome, Arrow, David’s Sling) বিশ্বসেরা হলেও, ২০০০ কিলোমিটার দূরে ইরানের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি আক্রমণ পরিচালনা করা তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তবে, গোয়েন্দা তথ্য ও স্পেশাল অপারেশন ক্যাপাবিলিটি ইসরাইলকে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে।
ইরান দাবি করেছে, তাদের কাছে লক্ষাধিক ড্রোন ও হাজার হাজার ব্যালিস্টিক মিসাইল রয়েছে। তবে, সাম্প্রতিক ইসরাইলি হামলায় ইরানের মিসাইল লঞ্চার, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ও কমান্ড সেন্টার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে, ইরান প্রত্যাশিত মাত্রায় পাল্টা হামলা চালাতে পারেনি। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ইরান ১৫০-২০০টি মিসাইল ছুড়েছে, যদিও তারা ১৮০০-২০০০ মিসাইল ছোড়ার কথা বলেছিল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান এখনো তাদের সামরিক এসেট পুনর্বিন্যাস ও কমান্ড-কন্ট্রোল পুনর্গঠনে ব্যস্ত। ইসরাইলের দ্রুত ও লক্ষ্যভিত্তিক হামলার কারণে ইরান বড় ধরনের পাল্টা আঘাতের সুযোগ পাচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসরাইলের আকাশ আধিপত্য ও আধুনিক প্রযুক্তি ইরানকে কৌশলগতভাবে দুর্বল করে দিয়েছে। ইরান প্রচুর মিসাইল ও ড্রোন থাকার দাবি করলেও, বাস্তবে তাদের সক্ষমতা বড় আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইসরাইলের দীর্ঘমেয়াদি আক্রমণ সক্ষমতা সীমিত হলেও, ইরান যদি দ্রুত রিগ্রুপ করতে না পারে, তাহলে আরও বড় ধরনের হামলার আশঙ্কা রয়েছে।
বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল-ইরান উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। দুই দেশের সামরিক শক্তি ও কৌশলগত অবস্থান নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তনশীল; তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসরাইল সামরিকভাবে কৌশলগত সুবিধা ধরে রেখেছে, বিশেষত আকাশে আধিপত্যের কারণে। পরিস্থিতি আরও কোন দিকে মোড় নেয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
১২৫ বার পড়া হয়েছে