সর্বশেষ

জাতীয়

ড. ইউনূস দেশে ফিরলেন: কি ছিল ৪ দিনের সফরে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫ ৫:৪৩ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
চার দিনের ব্যস্ততম যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশে ফিরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শনিবার (১৪ জুন) সকাল পৌনে ১০টায় তাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ করে। এই সফরে তিনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, আন্তর্জাতিক সম্মাননা গ্রহণ এবং রাজনৈতিক সংলাপে অংশ নেন, যা দেশের রাজনীতি ও কূটনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তবে সফরের কিছু সীমাবদ্ধতা ও বিতর্কও ছিল।

লন্ডনে পৌঁছানোর পর মাত্র দুই ঘণ্টা বিশ্রাম নিয়ে ড. ইউনূস দিনভর কর্মসূচি শুরু করেন। প্রথম দিনেই তিনি এয়ারবাস ও মেনজিস এভিয়েশনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন, যেখানে বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতের উন্নয়ন ও পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়।
এরপর যুক্তরাজ্যের অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের (এপিপিজি) সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা সংকট এবং ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়।

সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি ছিল ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে বাকিংহাম প্যালেসে সাক্ষাৎ ও ‘কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ।
সফরের শেষ দিনে ডরচেস্টার হোটেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যা দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে সম্ভাব্য মোড় ঘোরানোর ইঙ্গিত দেয়।

ব্রিটিশ রাজা চার্লসের কাছ থেকে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার গ্রহণ এবং ৩০ মিনিটের একান্ত বৈঠক বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও মানবকল্যাণে ড. ইউনূসের অবদানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করেছে। তারেক রহমানের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠকে জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে আলোচনা হয়। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের রমজানের আগেই নির্বাচন সম্ভব—তবে সংস্কার ও বিচারে অগ্রগতি প্রয়োজন।

যুক্তরাজ্য সফরে পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ সরকারের সহযোগিতায় শেখ হাসিনার সরকারের শীর্ষ এক কর্মকর্তার ১৭০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পত্তি জব্দ হয়েছে বলে প্রেস সচিব জানিয়েছেন। হাউস অব কমন্সের স্পিকারসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক, এভিয়েশন ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নিয়ে আন্তর্জাতিক কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা, এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ব্রিটিশ এমপিদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার সফরের সূচিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকের কথা থাকলেও, শেষ পর্যন্ত সেটি হয়নি। কূটনৈতিক মহলে এটি একটি বড় ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। সফরের সময় টিউলিপ সিদ্দিকের চিঠি ও সাক্ষাৎ ইস্যুতে দ্বিধা, সফরের ব্যয় ও কিছু কর্মসূচি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে।

ড. ইউনূসের ৪ দিনের লন্ডন সফর ছিল কর্মব্যস্ত ও বহুমাত্রিক অর্জনে ভরা। আন্তর্জাতিক সম্মাননা, রাজনৈতিক সংলাপ ও অর্থপাচার প্রতিরোধে কূটনৈতিক অগ্রগতি এই সফরের বড় সাফল্য। তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক না হওয়া ও কিছু বিতর্ক সফরের সফলতায় আংশিক ছায়া ফেলেছে। তবুও, দেশের রাজনৈতিক সংকট নিরসন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক জোরদারে এই সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

১২৯ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন