সর্বশেষ

জাতীয়

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে দুর্নীতি, পাচার বিতর্কে সজীব ওয়াজেদ জয় ও টিউলিপ সিদ্দিক!

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫ ৫:২৮ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে দুর্নীতি, অর্থপাচার ও সম্পদ গোপনের অভিযোগ নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন চলছে।

একইসঙ্গে যুক্তরাজ্যে শেখ হাসিনার ভাগ্নি এমপি টিউলিপ সিদ্দিকও দুর্নীতির অভিযোগের মুখে পড়েছেন। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে এই দুই পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্ত, আইনি প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

 

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত এফবিআই-এর তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, সজীব ওয়াজেদ জয়ের মালিকানায় যুক্তরাষ্ট্রে ৮টি বিলাসবহুল গাড়ি এবং পাঁচটি কোম্পানির সম্পৃক্ততা রয়েছে। গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে ম্যাকলারেন ৭২০এস, মার্সিডিজ এএমজি জিটি, এস-ক্লাস, লেক্সাস জিএক্স, রেঞ্জ রোভার, জিপ গ্র্যান্ড চেরোকি ইত্যাদি। এছাড়া, হংকং ও কেম্যান আইল্যান্ডে তার ব্যাংক হিসাবের সন্ধান পাওয়া গেছে এবং ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক ও লন্ডনে সন্দেহজনক অর্থ স্থানান্তরের তথ্যও উঠে এসেছে। এফবিআই দাবি করেছে, শেখ হাসিনা ও জয় মিলে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন।

 

এফবিআই প্রতিবেদনটি ২০২৩ সালের ২৩ এপ্রিল মার্কিন বিচার বিভাগের অপরাধ বিভাগের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে জমা দেয়। তবে এই তথ্য ২০২৫ সালের ১৩-১৪ জানুয়ারি বাংলাদেশের ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং তখন থেকেই ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
এফবিআই-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারা সন্দেহজনক ব্যাংক হিসাব ও অর্থ স্থানান্তরের বিষয়ে যুক্তরাজ্যসহ আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করেছে। মার্কিন বিচার বিভাগের মানি লন্ডারিং ও সম্পদ বাজেয়াপ্তকরণ বিভাগ (MLARS) এ ধরনের তহবিল চিহ্নিত, সংযত, জব্দ এবং বাজেয়াপ্ত করার জন্য আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারে। একইসঙ্গে, বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সঙ্গে তথ্য বিনিময় ও তদন্তে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

 

এদিকে ২০২৫ সালের মে মাসে সজীব ওয়াজেদ জয় ওয়াশিংটন ডিসির ইউএস সিটিজেনশিপ সেন্টারে মার্কিন নাগরিকত্বের শপথ নেন এবং নাগরিকত্ব সনদ পান।

 

শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধেও যুক্তরাজ্যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও ব্রিটিশ মিডিয়ার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তার লন্ডনের বাসস্থান ও সম্পদের উৎস নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, এসব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত smear campaign।

 

সজীব ওয়াজেদ জয় অভিযোগগুলোকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন। তার বক্তব্য, এফবিআই রিপোর্টে বহু ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য আছে এবং তিনি কোনো অপরাধ করেননি।

 

টিউলিপ সিদ্দিকও দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং যুক্তরাজ্যের আদালতের ওপর আস্থা রাখার কথা বলেছেন।
তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও দুর্নীতি দমন কমিশন উভয় ক্ষেত্রেই তদন্ত অব্যাহত রেখেছে। ড. ইউনূস স্পষ্ট করেছেন, টিউলিপের বিষয়টি আদালতের এবং তিনি এতে হস্তক্ষেপ করবেন না।

 

অন‍্যদিকে জয়ের মার্কিন নাগরিকত্ব গ্রহণকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন দলের সমর্থক ও বিরোধীরা।

 

সজীব ওয়াজেদ জয় ও টিউলিপ সিদ্দিক—দুই পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগ এখন আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রে। এফবিআই ও দুদকের তদন্ত, যুক্তরাজ্যে টিউলিপের পদত্যাগ, এবং জয়ের মার্কিন নাগরিকত্ব গ্রহণ—সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ও প্রবাসী রাজনীতিতে অনিশ্চয়তা ও উত্তেজনা বাড়ছে। আইনি প্রক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক তদন্তের ফলাফলের দিকেই এখন সকলের নজর।

১২১ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন