সর্বশেষ

জাতীয়

ইউনূস-তারেক লন্ডন বৈঠক

রমজানের আগেই হতে পারে নির্বাচন: যৌথ ঘোষণায় বিষয়ভিত্তিক ঐক্যমত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫ ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে লন্ডনে অনুষ্ঠিত ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বহুল আলোচিত বৈঠক।

দেশের রাজনৈতিক সংকট, নির্বাচনকাল নির্ধারণ ও ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক রূপরেখা নিয়ে এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে ছিল পুরো জাতি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা একে ‘রাজনীতির শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচ’ বা ‘নবদিগন্তের সূচনা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। দুই নেতার এই রুদ্ধদ্বার আলোচনা শুধু দেশের ভেতরেই নয়, আন্তর্জাতিক মহলেও গভীর গুরুত্ব বহন করছে।


লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে আজ (১৩ জুন, ২০২৫) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে বহুল আলোচিত বৈঠক শেষ হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলা এই বৈঠকে দেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনসহ রাজনৈতিক সংকট নিরসনের নানা দিক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।


বৈঠক শেষে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির এবং সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও প্রেস সচিব শফিকুল আলমসহ দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তারা জানান, নির্বাচনের সময়সূচি, রাজনৈতিক সংস্কার ও ভবিষ্যৎ সংলাপ—এই তিনটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং বিষয়গুলো নিয়ে দুই পক্ষই আরও আলোচনা চালিয়ে যাবে।


বৈঠক শেষে জানা যায়, দুই পক্ষ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন রমজান মাসের আগেই—২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে—আয়োজনের ব্যাপারে নীতিগত ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যম ও বৈঠক-সংশ্লিষ্ট সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে নির্বাচন দাবি করে আসছিল, অপরদিকে সরকার এপ্রিল ২০২৬-এর কথা বলছিল। অবশেষে দুই পক্ষই নমনীয়তা দেখিয়ে ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এ নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে একমত হন, যাতে রমজান ও গ্রীষ্মের তীব্রতা এড়ানো যায়।


বৈঠকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে নির্বাচনী ব্যবস্থায় জরুরি কিছু সংস্কার আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা, রাজনৈতিক মামলা ও বন্দীদের মুক্তি, এবং নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা—এসব বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। উভয় পক্ষ ভবিষ্যতেও নিয়মিত সংলাপ ও আলোচনা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন।


বিএনপির শীর্ষ নেতারা এই বৈঠককে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন। তারা মনে করছেন, এই সমঝোতা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে বড় অগ্রগতি।


লন্ডনে অনুষ্ঠিত ড. ইউনূস-তারেক বৈঠক বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বৈঠকে উভয় পক্ষ নির্বাচনকাল, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ, এবং রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেছেন। যদিও সব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, দুই পক্ষই ভবিষ্যতে সংলাপ অব্যাহত রাখার এবং জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বৈঠক দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পথে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। এখন জাতি অপেক্ষায়—এই ঐতিহাসিক সংলাপের বাস্তবায়ন কীভাবে দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে।

১৩২ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন