সর্বশেষ

জাতীয়

ফজলুর রহমানের একের পর এক বিতর্কিত বক্তব্যে দেশজুড়ে বিব্রত সাধারণ জনগণ

মনজুর এহসান চৌধুরী
মনজুর এহসান চৌধুরী

শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০২৫ ১:০৮ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমান সম্প্রতি একের পর এক বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে দেশের রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছেন।

তার মন্তব্যে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান, ছাত্রসমাজ, নারী, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অস্বস্তি ও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

 

এক অনুষ্ঠানে ফজলুর রহমান বলেন, “৫০০ টাকার জায়গায় ১০০০ টাকা দিলে ওয়াজের বা মোনাজাতের ভাষা পরিবর্তন হয়ে যায়। এদের কথার কোন উত্তর আমি দিতে চাই না। এরা বড় বড় কথা বলে, কিন্তু কোনো সেন্স কাজ করে না। এরা হলো মোল্লা মুন্সি।”

 

তিনি আরও বলেন, “এই ছেলেপেলেরা (মাদ্রাসা ছাত্র) কিছুই বোঝে না। হুজুর যা বলে তাই শোনে। তারা খায় লিল্লাহ টাকা, মানুষের অনুদানে চলে।”

 

নারী ও নারী অধিকার নিয়ে বলেন, “নারী নীতি যারা করে, আমি বলি এমন সন্তান যেন কোনো মা গর্ভে না নেয়। যদি বেগম রোকেয়া আজ থাকতেন, এই মোল্লা মুন্সিরা তাকেও দেশছাড়া করত।”

 

এসব বক্তব্যে দেশের আলেম সমাজ, ইসলামিক প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মুসলমানদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
ছাত্র ও তরুণ সমাজ নিয়ে অবজ্ঞাসূচক মন্তব্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছাত্রদের উদ্দেশে ফজলুর রহমান অবজ্ঞাসূচক মন্তব্য করেছেন, যা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

 

ফজলুর রহমান বলেছেন, “এখন শুধু বাংলাদেশের মানুষ একটা ভোট দিতে চায়। মানুষ ১৪ সনে এমপি ভোট দিতে পারেনি, আওয়ামী লীগ নিজেদের ভোট নিজেরা দিয়েছে, কেউ কনটেস্ট করেনি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি রাজাকারবিরোধী। এর জন্য যদি আমাকে কেউ পছন্দ না করেন, আমাকে ভোট দিয়েন না। আমি ভোট চাই না। আমি রাজাকার-আলবদরের বিরুদ্ধে।”

 

সাম্প্রতিক সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফর ও বিএনপি নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে ফজলুর রহমান বলেন, “ড. ইউনূস সব পথ হারিয়ে এখন লন্ডনে তারেক রহমানের কাছে গেছেন। ১৫ দিন আগেও ছয় দিন পর্যন্ত বিএনপি সময় চাওয়ার পরও ইউনূস সাহেব এক ঘণ্টা সময় দেন নাই; এখন উনি ১২ ঘণ্টা বিমান চালিয়ে গেছেন আমাদের নেতার সঙ্গে কথা বলার জন্য। সাপ গর্তে যাওয়ার সময় সোজা হয়েই যায়।”

 

তিনি আরও বলেন, “আমি আশা করব ইউনূস সাহেব সৎভাবে সত্যভাবে কথা বলবেন আমাদের নেতার সঙ্গে। আপনি ইউনূস সাহেব আমার মুরুব্বি। আমার চেয়ে ৯ বছরের বড় আপনি। আপনি নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত। আমি আশা করব, তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে এই দেশকে আপনারা রক্ষা করবেন।”

 

এ বক্তব্যে রাজনৈতিক মহলে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এবং অনেকেই মনে করছেন, ড. ইউনূসের মতো আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বকে এভাবে কটাক্ষ করা দেশের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর।

 

ফজলুর রহমানের এসব বক্তব্যের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন ইসলামিক প্রতিষ্ঠান, আলেম সমাজ ও সাধারণ জনগণ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

 

একজন দেশপ্রেমিক সচেতন নাগরিকের দৃষ্টিতে, ফজলুর রহমানের এসব বক্তব্য দেশের সামাজিক সম্প্রীতি, ধর্মীয় সহনশীলতা, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক, কূটনৈতিক পরিবেশ এবং আন্তর্জাতিক মর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সাধারণ মানুষ এসব মন্তব্যে বিব্রত, ক্ষুব্ধ ও হতাশ। দেশের ঐক্য, গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি রক্ষায় দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করছে জনগণ।

১২১ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
জাতীয় নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন