যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি দুর্নীতির অর্থ: তদন্ত, কূটনৈতিক চাপ ও লেবার পার্টির সংকট

বৃহস্পতিবার , ১২ জুন, ২০২৫ ১০:২৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ ফেরত আনতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টা জোরদার করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন এবং ব্রিটিশ ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির (এনসিএ) সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। এনসিএ ইতিমধ্যে পাচারকৃত অর্থ শনাক্ত ও জব্দের দুটি পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকীর সম্পৃক্ততার অভিযোগ ঘিরে ব্রিটিশ রাজনৈতিক অঙ্গনেও তোলপাড় চলছে। রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প থেকে বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে টিউলিপ সিদ্দিকী, তার খালা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। টিউলিপের বিরুদ্ধে লন্ডনের দামি ফ্ল্যাটসহ বিভিন্ন সম্পত্তি উপহারের অভিযোগও উঠেছে, যা তার খালার রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে দাবি করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার শুরুতে টিউলিপের পাশে থাকার ঘোষণা দিলেও, ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে তার পদে বিকল্প খোঁজার খবরও প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও ডাউনিং স্ট্রিট আনুষ্ঠানিকভাবে বিকল্প খোঁজার বিষয়টি অস্বীকার করেছে, টিউলিপ নিজেই তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নৈতিকতা বিষয়ক উপদেষ্টার কাছে চিঠি দিয়েছেন। লেবার পার্টির অভ্যন্তরেও তার পদত্যাগ নিয়ে আলোচনা চলছে।
এদিকে, বাংলাদেশের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলো, যেমন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), স্পটলাইট অন করাপশন ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-ইউকে, যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে পাচারকৃত অর্থ দ্রুত জব্দ ও ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে। তারা সন্দেহভাজন বাংলাদেশি অলিগার্কদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং সম্পদ পুনরুদ্ধারে ব্রিটিশ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কার্যক্রম আরও জোরদার করার দাবি তুলেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বিতর্ক লেবার পার্টির জন্য বিব্রতকর হলেও, কেবল এই ইস্যুতে দলটির সরকার পতনের সম্ভাবনা নেই। তবে টিউলিপ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ প্রমাণিত হলে, তা ব্রিটিশ রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। একই সঙ্গে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার কূটনৈতিক ও আইনি প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
১২১ বার পড়া হয়েছে