ড. ইউনূস-তারেক রহমান বৈঠক: বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্ব, প্রত্যাশা ও বিশ্লেষণ

বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫ ২:৪৩ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বহুল আলোচিত বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে। স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে এই ‘ওয়ান-টু-ওয়ান’ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
এই বৈঠককে ঘিরে শুধু রাজনৈতিক অঙ্গন নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও ব্যাপক কৌতূহল ও আলোচনা চলছে। ঈদের ছুটির সময় থেকেই দেশের রাজনীতিতে উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে এই বৈঠককে ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বৈঠকের গুরুত্ব ও সম্ভাব্য আলোচ্য বিষয় হতে পারে জাতীয় নির্বাচন ও সময়সূচি, রাজনৈতিক সংস্কার ও ‘জুলাই সনদ, রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসন ইত্যাদি।
ড. ইউনূস সম্প্রতি জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন। অন্যদিকে, বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায়। এই বৈঠকে নির্বাচনকাল ও কাঠামো নিয়ে সমঝোতার পথ খোঁজা হতে পারে। নির্বাচনী পরিবেশ, কাঠামোগত সংস্কার, এবং রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। দীর্ঘদিন পর সরাসরি শীর্ষ পর্যায়ে সংলাপের মাধ্যমে আস্থার সংকট কমানো ও সমঝোতার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, বৈঠকের নির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডা নেই, বাংলাদেশের যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু আলোচনায় আসতে পারে।
বৈঠক নিয়ে বিএনপি নেতারা প্রত্যাশা করে বক্তব্য প্রদান করছেন। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করেন, এই বৈঠক রাজনৈতিক সংকট নিরসনে নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং সমঝোতার পথ খুলে দিতে পারে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বৈঠকটিকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এর মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে সুবাতাস বইবে বলে তারা বিশ্বাস করেন। বিএনপি নেতারা আশা করছেন, আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনসহ সব সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে এবং যৌক্তিক সময়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষেরও প্রত্যাশা রয়েছে এই বৈঠক ঘিরে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও অন্যান্য দল মনে করছে, এই বৈঠক ভুল বোঝাবুঝি নিরসন, রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা এবং উত্তেজনা প্রশমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এটি রাজনৈতিক পরিপক্বতার নিদর্শন হিসেবেও দেখা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক অঙ্গন মনে করছে, এই সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠার পথ তৈরি হবে এবং দেশে স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা নিশ্চিত হবে। বৈঠকটি আন্তর্জাতিক মহলেও নজর কেড়েছে, কারণ দুই নেতার অবস্থান এবং বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিতকরণে বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক শুধু বিএনপি নয়, গোটা জাতি ও রাজনৈতিক অঙ্গনের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সবাই আশা করছে, এই সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকট নিরসন ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা নিশ্চিত হবে।
১২৬ বার পড়া হয়েছে