কোরবানির পর পোস্তায় চামড়ার আমদানি কম, দামেও ভাটা

শনিবার, ৭ জুন, ২০২৫ ৪:৪০ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
ঈদুল আজহার নামাজ শেষে সারা দেশে কয়েক লাখ পশু কোরবানি দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে শুরু হয় কাঁচা চামড়া সংগ্রহের ধুম।
রাজধানীর ঐতিহাসিক লালবাগের পোস্তা এলাকা দেশের অন্যতম বৃহৎ কাঁচা চামড়ার আড়ত এলাকা হিসেবে পরিচিত। তবে এবার পোস্তায় প্রত্যাশিত হারে চামড়া আসছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শনিবার (৭ জুন) ঈদের দিন বিকেল থেকে ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তসহ আশপাশের এলাকা থেকে ভ্যান, ছোট ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহনে করে মৌসুমি ব্যবসায়ী, ফড়িয়া এবং বিভিন্ন মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চামড়া নিয়ে আসতে শুরু করেন। তবে সরেজমিনে দেখা গেছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক কম।
আড়তদারদের তথ্য অনুযায়ী, ঈদের দুপুর থেকেই চামড়া আসতে শুরু করে, বিকেলের পর সেই গতি কিছুটা বাড়ে। তবে তারা বলছেন, রাতভর চামড়া আসবে এবং তারা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কাজ করছেন।
পোস্তায় বড় গরুর চামড়া আকারভেদে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায় কেনা হচ্ছে। যদিও কেউ কেউ বলছেন, কিছু ভালো মানের চামড়া ৯০০ টাকায়ও কেনা হচ্ছে, তবে তা সংখ্যায় খুবই সীমিত। ছোট গরুর চামড়ার দাম আরও কম।
চামড়া সংগ্রহে ব্যয়ের প্রসঙ্গে আরাফাত লেদার এর কর্ণধার মো. জিবলু বলেন, “চামড়া গোডাউনে ঢোকানো, লবণ লাগানো, শ্রমিক মজুরি—সব মিলিয়ে প্রতি চামড়ায় গড়ে ৪০০ টাকার মতো খরচ হয়। ফলে ৮০০ টাকায় কিনলেও মোট খরচ গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা, যেটা সরকারের নির্ধারিত দামের কাছাকাছি।”
চামড়ার দাম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন ফড়িয়া তবারক হোসেন। তিনি বলেন, “আড়তদাররা প্রথমে ৬০০ টাকা দাম বলেন, অনেক দরদাম করে ৭৫০-৮০০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এর চেয়ে কমে বিক্রি করব না বলে অনেক সময় আবার ভ্যানে তুলে নিচ্ছি।”
হাজী ট্রেডিং করপোরেশন এর ম্যানেজার মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন জানান, “চামড়ার দাম আকারভেদে কমবেশি হচ্ছে। তবে এবারে চামড়ার আমদানি খুব কম। অনেক চামড়া সরাসরি সাভারের ট্যানারিগুলোতে চলে যাচ্ছে, ফলে পোস্তায় সরবরাহ কম।”
চামড়ার বাজারে এই মন্থর অবস্থা শুধু ব্যবসায়ীদের নয়, প্রভাব ফেলছে মাদরাসা ও এতিমখানাগুলোর আয়েও—যারা কোরবানির চামড়া বিক্রি করে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে থাকে।
১০৬ বার পড়া হয়েছে