ঈদের ছুটিতে হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিশেষ নির্দেশনা

শনিবার, ৭ জুন, ২০২৫ ৪:২২ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
দেশজুড়ে ঈদের উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করলেও হাসপাতালগুলোতে চিত্র ঠিক তার বিপরীত। অসুস্থ ও দুর্ঘটনায় আহত রোগীরা ঈদের খুশি থেকে দূরে থেকে ছুটতে হচ্ছে হাসপাতালে।
সেখানে পৌঁছেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা—চিকিৎসক সংকট, পর্যাপ্ত জনবল ও ওষুধের অভাবে রোগীদের পড়তে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে।
বিশেষ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বড় বড় সরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে ছুটির মধ্যে চিকিৎসকের সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অনুপস্থিতি এবং জরুরি সেবায় অতিরিক্ত চাপের কারণে রোগীদের দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে জরুরি চিকিৎসার জন্য।
এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সম্প্রতি একটি বিস্তৃত নির্দেশনা জারি করেছে, যাতে ঈদের ছুটির মধ্যেও জরুরি চিকিৎসাসেবা চালু থাকে এবং সাধারণ মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত না হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান নির্দেশনাসমূহ:
১. জরুরি বিভাগে চিকিৎসক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগের নির্দেশ।
২. লেবার রুম, ইমারজেন্সি অপারেশন থিয়েটার ও ল্যাব সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।
৩. ছুটির আগে ও পরে পর্যায়ক্রমে ছুটি দিয়ে জনবল নিশ্চিত করতে হবে।
৪. প্রতিটি হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধানদের নিজ নিজ বিভাগ তদারকির নির্দেশ।
৫. সকল সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জরুরি ও এক্স-রে সেবা চালু রাখতে হবে।
৬. অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিস সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।
৭. ছুটি চলাকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্যালাইন ও সার্জিকাল সামগ্রী মজুদ রাখার নির্দেশ।
৮. বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে নিবন্ধিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ২৪ ঘণ্টার জরুরি সেবা চালু রাখতে হবে।
৯. পশুর হাট সংলগ্ন এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা প্রস্তুতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
১০. ঈদের দিনে রোগীদের জন্য উন্নতমানের খাবার ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মঈনুল আহসান বলেন, "বেসরকারি হাসপাতালে আমাদের নিয়ন্ত্রণ সীমিত হলেও নিবন্ধিত চিকিৎসকদের মাধ্যমে জরুরি ও প্রসূতি সেবা চালু রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।"
আশার আলো
যদি এই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন হয়, তাহলে ঈদের ছুটির সময় সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে দেখা দেওয়া চরম দুর্ভোগ অনেকটাই হ্রাস পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। নিস্তব্ধ করিডোর, অশ্রুসজল মুখ, আর যন্ত্রণায় কাতর রোগীদের দৃশ্য একদিন বদলে যাবে এমনটাই প্রত্যাশা।
আহমেদ নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, “ঈদের দিনেও হাসপাতালে ছুটে আসতে হয়েছে। চিকিৎসক না থাকায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। আশা করি, ভবিষ্যতে অন্তত এমন দিনে চিকিৎসাসেবা পাওয়া সহজ হবে।”
ঈদের আনন্দ যেন কেউ থেকে বঞ্চিত না হয় — এই লক্ষ্যেই সরকারের এমন পদক্ষেপ। কারণ, ব্যথা ও অসুস্থতা কখনো ছুটি নেয় না।
১০৬ বার পড়া হয়েছে