শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার বৃহত্তম জামাত অনুষ্ঠিত, চার স্তরের নিরাপত্তা

শনিবার, ৭ জুন, ২০২৫ ৫:০০ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হলো দেশের সর্ববৃহৎ ঈদুল আজহার জামাত।
শনিবার (৭ জুন) সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত এ জামাতে ইমামতি করেন মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
জানা গেছে, ঈদের নামাজে অংশ নিতে ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। লাখো মুসল্লির ঢলে পূর্ণ হয়ে ওঠে ঈদগাহ মাঠ। স্থানীয় প্রশাসন ও আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতিবারের মতো এবারও ঈদের জামাতে বিপুল মুসল্লির অংশগ্রহণে ঈদগাহ ময়দান পরিণত হয় মিলনমেলায়।
নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। জামাতে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
জামাত ঘিরে নেওয়া হয় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দায়িত্ব পালন করে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি এবং সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ফিন্যান্স) মো. কাজেম উদ্দিন জানান, মাঠে ছিল আর্চওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার, ড্রোন ও ভিডিও ক্যামেরা, মাইনোকুলার এবং সিসিটিভি ক্যামেরা—সব মিলিয়ে ছিল সর্বোচ্চ সতর্কতা।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিজাবে রহমত বলেন, “নিরাপত্তার পাশাপাশি যাতায়াতে সুবিধা দিতে চালু রাখা হয়েছে দুটি শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল ট্রেন, যা কিশোরগঞ্জ থেকে ময়মনসিংহ ও ভৈরব রুটে চলাচল করে।”
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৭ জুলাই এই ঈদগাহে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে দুই পুলিশ সদস্য, এক নারী এবং এক হামলাকারী নিহত হন। আহত হন আরও ১৬ জন। এরপরও কমেনি মুসল্লিদের উপস্থিতি। বরং প্রতি বছরই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ছুটে আসেন এ ঈদগাহে।
ঐতিহাসিকভাবে ‘শোলাকিয়া’ নামটির উৎপত্তি নিয়ে রয়েছে জনশ্রুতি। বলা হয়ে থাকে, সুফি সাধক শাহ সুফি সৈয়দ আহমদের মোনাজাতে তিনি সোয়া লাখ মুসল্লির সমাগমের কথা বলেন। আবার অন্য মতে, প্রথম ঈদের জামাতে অংশ নেয় ১ লাখ ২৫ হাজার মুসল্লি। সেই ‘সোয়া লাখ’ শব্দ থেকেই ‘শোলাকিয়া’ নামের উৎপত্তি বলে বিশ্বাস করা হয়।
১৯৫০ সালে ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান মান্নান দাদ খাঁ ঈদগাহ মাঠের জন্য ৪.৩৫ একর জমি ওয়াকফ করেন। বর্তমানে এ মাঠে ২৬৫টি কাতারে প্রতিটি কাতারে প্রায় ৫০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
১০৪ বার পড়া হয়েছে