ইউক্রেন হামলা ও ইরান নিয়ে ট্রাম্প পুতিনের গোপন ফোনালাপ

বৃহস্পতিবার , ৫ জুন, ২০২৫ ৫:৫৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
বিশ্ব রাজনীতির দুই প্রভাবশালী নেতা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি এক ফোনালাপে ইউক্রেন যুদ্ধে বর্তমান পরিস্থিতি এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন।
ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে, আর ইরানের পারমাণবিক বিষয়টি বিশ্বব্যাপী নতুন কূটনৈতিক সংকট তৈরি করেছে—এই প্রেক্ষাপটে আলোচনাটি বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
৪ জুন, পুতিন নিজেই ট্রাম্পকে ফোন করে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার বিষয়ে প্রতিক্রিয়ার কথা জানান। ট্রাম্প পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় এ কথোপকথনের বর্ণনা দেন। রাশিয়া অভিযোগ করেছে, ইউক্রেনের পাশাপাশি পশ্চিমা দেশগুলোরও এই হামলায় জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে, যা কূটনৈতিক চাপের সৃষ্টি করেছে। একই সঙ্গে, তারা ইরানের সঙ্গে নতুন পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে সম্ভাব্য আলোচনাও করেন।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে যুদ্ধ এবং সামরিক হামলার ব্যাপারে বিস্তারিত আলাপ হয়েছে। পুতিন স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তারা এই হামলার জবাবে শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে পারে। তবে ট্রাম্পের মতে, তাত্ক্ষণিক কোনো শান্তি আলোচনা বা সমাধানের আশার কিছু নেই।
রাশিয়া ইতোমধ্যেই ইউক্রেনের ড্রোন হামলার জবাবে সামরিক বিকল্পগুলো বিবেচনা করছে এবং পশ্চিমা দেশগুলোকে কিয়েভকে সঠিক পথে আনতে আহ্বান জানাচ্ছে। অন্যদিকে, ইউক্রেন এসব হামলাকে যুদ্ধের প্রতিরোধের অংশ হিসেবে দেখায়। তবে পশ্চিমা গোয়েন্দা সূত্র বলছে, রাশিয়ার পারমাণবিক বোমারু ঘাঁটিতে হামলার পূর্বে তারা অবহিত ছিল না।
ট্রাম্প দাবি করেন, তার শাসনামলে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধে সমাধান করতে পারতেন, যদিও সে বিষয়ে কোনো বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রকাশ করেননি। তিনি পুতিনের প্রতি সাম্প্রতিক বিরক্তিরও ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ইরান বিষয়েও দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, পুতিন তেহরানের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা করতে আগ্রহী, কিন্তু ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র হীন থাকার ওপর তাদের ঐকমত্য রয়েছে। তিনি বলেন, “ইরান ইচ্ছাকৃতভাবে আলোচনাকে দেরি করছে এবং এখন দ্রুত ও স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন।”
ক্রেমলিনের বরাতে জানা গেছে, পুতিন ইতোমধ্যে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ানকে জানিয়েছেন, মস্কো পারমাণবিক আলোচনায় অগ্রগতি সাধনে প্রস্তুত। তবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব জাতীয় স্বার্থবিরোধী বলে উড়িয়ে দিয়েছেন এবং পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ নিয়ে তীব্র মতবিরোধের কথা উল্লেখ করেছেন।
এই ফোনালাপের মাধ্যমে স্পষ্ট হচ্ছে, ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সামরিক উত্তেজনা আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা আছে। অন্যদিকে, ইরান ইস্যুতে নতুন কূটনৈতিক সমঝোতার সম্ভাবনা দেখা দিলেও বাস্তবায়ন কঠিন। তাই ট্রাম্প-পুতিন আলোচনাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক উদ্যোগ হলেও বড় ধরনের অগ্রগতি আশা করা কঠিন বলে মনে করা হচ্ছে।
১১২ বার পড়া হয়েছে