গাজায় ফের ইসরায়েলি হামলা, একদিনেই নিহত অন্তত ৫২ জন

মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫ ৩:২৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে আরও একদিনে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫২ জন ফিলিস্তিনি। সোমবার (২ জুন) প্রকাশিত বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫০০ জন।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা এখন প্রায় ৫৪ হাজার ৪৭০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ১ লাখ ২৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। বাস্তব সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছেন বা রাস্তায় নিথর পড়ে আছেন—যাদের কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে না।
গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েলের নতুন করে শুরু হওয়া হামলায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ২০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ১২ হাজার ৬৫০ জনেরও বেশি। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এই হামলাকে 'বর্বর' আখ্যা দিয়ে বলছে, এটি যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, চলমান সংঘাতে গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাসিন্দা এখন বাস্তুচ্যুত। তাদের অনেকেই আশ্রয়হীন, খাদ্য ও চিকিৎসা সেবা থেকেও বঞ্চিত। গাজার হাসপাতাল, স্কুল, সড়ক, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে।
আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ও পদক্ষেপ
গত বছরের নভেম্বরেই গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের পটভূমিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (ICJ) গণহত্যার অভিযোগ গঠিত হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে বাড়ছে উদ্বেগ। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ এবং গাজায় জরুরি মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর আহ্বান জানাচ্ছে। যদিও যুদ্ধবিরতির বারবার আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েলের অভিযান থেমে নেই।
উপসংহার
গাজায় প্রতিদিনের প্রাণহানির এই ধারা এখন শুধুই একটি যুদ্ধ নয়, এটি এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নিয়েছে। শিশু, নারী, বৃদ্ধ—কারো জন্যই নিরাপদ নয় এই ভূখণ্ড। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর হস্তক্ষেপ ছাড়া এই সংকটের অবসান এখনও অনিশ্চিত।
১২২ বার পড়া হয়েছে