বাজেটে প্রণোদনার অভাব, ফের মন্দার ধাক্কায় শেয়ারবাজার

সোমবার, ২ জুন, ২০২৫ ১২:০৮ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিনের টানা দরপতন ও বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির ধাক্কা এখনও কাটেনি।
সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর কিছুটা আশার আলো দেখলেও বাজেট ঘোষণার পর আবারও হতাশা ঘিরে ধরেছে বিনিয়োগকারীদের। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ নেমে এসেছে পাঁচ বছর আগের অবস্থানে। সেই সঙ্গে আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে দৈনিক লেনদেনও।
রাজনৈতিক অস্থিরতা কাটিয়ে জুলাইয়ের পরিবর্তনের পর শেয়ারবাজারে আশাবাদী হয়ে উঠেছিলেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তাঁদের প্রত্যাশা ছিল, বাজেটে বাজারে গতি ফেরাতে সরাসরি বিনিয়োগকারীদের জন্য আসবে কার্যকর প্রণোদনা। কিন্তু ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তেমন কোনো সুবিধা না থাকায় ক্ষুব্ধ ও হতাশ বিনিয়োগকারীরা আবারও রাজপথে নেমে এসেছেন।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেটে শেয়ারবাজার উন্নয়নে কিছু প্রস্তাবনা দিলেও সেগুলোর বেশিরভাগই প্রতিষ্ঠানভিত্তিক। প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট করহারে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার শর্তসাপেক্ষে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির ক্ষেত্রে তা সাড়ে ২৭ শতাংশ রাখা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট ব্যাংক লেনদেনের শর্ত পূরণ করলে এই ব্যবধান কমে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা যাবে।
তবে এই কর সুবিধা বাজারে ভালো কোম্পানি আনার উদ্দেশ্যে নেওয়া হলেও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির প্রস্তাবিত ১০ শতাংশ কর ব্যবধান বাজেটে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। বাজারসংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করছেন, এত কম ব্যবধানে ভালো কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্ত হওয়ার আগ্রহ তেমন থাকবে না।
বাজেটে আরও কিছু প্রস্তাব রয়েছে, যেমন—ব্রোকারেজ হাউসের লেনদেনের ওপর উৎসে কর প্রতি ১০০ টাকায় ৫ পয়সা থেকে কমিয়ে ৩ পয়সায় নামানো হয়েছে। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর করহার ৩৭.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৭.৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
তবে বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল মূলধনি মুনাফা ও লভ্যাংশ আয়ের ওপর থেকে কর প্রত্যাহার, যা বাজেটে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। এ কারণে বাজার সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করছেন, বাজেটে প্রস্তাবিত উদ্যোগগুলো শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে পর্যাপ্ত নয়।
পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি স্থবিরতা এবং সংস্কার কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট আরও গভীর হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, বাজেটে ঘোষিত প্রণোদনাগুলোর বাস্তবায়ন এবং আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে না।
এখন বাজারসংশ্লিষ্ট সবার নজর বাজেট-পরবর্তী সময়ে শেয়ারবাজার কোন দিকে যায়, সে দিকেই।
১২৮ বার পড়া হয়েছে