বাজেট উপস্থাপন: বৈষম্যহীন অর্থনৈতিক কাঠামো গঠনের প্রত্যয়

সোমবার, ২ জুন, ২০২৫ ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
টেকসই উন্নয়ন এবং বৈষম্যহীন অর্থনৈতিক কাঠামো গঠনের প্রত্যয় নিয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সোমবার (২ জুন) বিকেল ৩টায় তিনি এই বাজেট জাতির সামনে উপস্থাপন করেন।
অর্থ উপদেষ্টা জানান, সম্পদের সুষম বণ্টন, রাজস্ব ও ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষা এবং একটি বাস্তবমুখী ও কর্মক্ষম বাজেট বাস্তবায়নই এবারের মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন, “এই বাজেটের মাধ্যমে আমরা এমন একটি অর্থনৈতিক কাঠামো গড়তে চাই, যেখানে বৈষম্য হ্রাস পাবে এবং সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত হবে।”
রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ও পরিকল্পনা
প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের মোট জিডিপির ৯ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংগ্রহ করবে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা এবং বাকি ৬৫ হাজার কোটি টাকা আসবে অন্যান্য উৎস থেকে।
রাজস্ব খাতে কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করতে এনবিআরের জনবল বাড়ানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন সালেহউদ্দিন আহমেদ। পাশাপাশি কর অব্যাহতির সুযোগ সীমিত করা, করজাল সম্প্রসারণ এবং পণ্য ও সেবায় সমান হারে ভ্যাট আরোপের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
খরচের কাঠামো ও বাজেট ঘাটতি
নতুন অর্থবছরের জন্য মোট ব্যয়ের প্রস্তাব ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ১২ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
বাজেটে প্রস্তাবিত ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশের সমান। এই ঘাটতির মধ্যে এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা দেশের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এবং এক লাখ এক হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক উৎস থেকে সংগ্রহের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সুদ পরিশোধ বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা।
সরকারি কর্মচারীদের জন্য বাড়তি সুবিধা
২০১৫ সালের পর থেকে কোনো নতুন বেতন কাঠামো না থাকায় এবার সরকারি কর্মচারীদের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা। তবে নতুন পে-স্কেল ঘোষণা হয়নি।
চলতি অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট সংশোধন
২০২৪-২৫ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৫ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা মূল বাজেটের তুলনায় ২৩ হাজার কোটি টাকা কম। সরকারি ব্যয় কমানো হয়েছে ৫৩ হাজার কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা থেকে কমিয়ে রাখা হয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা।
ঘাটতির পরিমাণও সংশোধিত বাজেটে কমানো হয়েছে। যেখানে মূল বাজেটে ঘাটতি ছিল ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, সেখানে এখন তা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৪ দশমিক ১ শতাংশ।
১২৪ বার পড়া হয়েছে