সিনহা হত্যা : প্রদীপ-লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড, ছয়জনের যাবজ্জীবনও বহাল হাইকোর্টে

সোমবার, ২ জুন, ২০২৫ ৭:০১ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় প্রধান দুই আসামি—সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে মামলার অপর ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও বহাল রাখা হয়েছে।
সোমবার (২ জুন) বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ের পর ডেথ রেফারেন্স অনুমোদন ও আপিলের শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
রায়ের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জসীম সরকার গণমাধ্যমকে জানান, “হাইকোর্ট ডেথ রেফারেন্স মঞ্জুর করেছেন এবং আসামিদের করা আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকল, একইসঙ্গে ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও বহাল থাকল।”
তবে প্রদীপের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেওয়া জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী জানান, হাইকোর্টের রায়ের প্রত্যয়িত অনুলিপি হাতে পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাঁর মক্কেল আপিল করার সুযোগ পাবেন।
মামলার ছয় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হলেন—সাবেক এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেব, বাহারছড়ার মারিশবুনিয়ার বাসিন্দা মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিন।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। পরে সিনহার বোন বাদী হয়ে টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ায় ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত রায় দেন। তাতে প্রদীপ ও লিয়াকতকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হলে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যা “ডেথ রেফারেন্স” হিসেবে বিবেচিত হয়। পাশাপাশি আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল, জেল আপিল ও বিভিন্ন আবেদন করার সুযোগ পান। এই মামলায়ও আসামিরা ২০২২ সালে পৃথকভাবে আপিল করেন।
মামলার নথিপত্র হাইকোর্টে পৌঁছায় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। পরে পেপারবুক প্রস্তুতসহ প্রক্রিয়া শেষে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে একটি দ্বৈত বেঞ্চ গঠন করা হয়। গত ২৩ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়ে ২৯ মে শেষ হয়। এরপর আজ (২ জুন) রায়ের দিন ধার্য ছিল।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে নেতৃত্ব দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জসীম সরকার, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লাবনী আক্তার ও সুমাইয়া বিনতে আজিজ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী, এস এম শাহজাহান, শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম ও শফিকুল ইসলাম রিপন।
১৪৪ বার পড়া হয়েছে