পঞ্চম দিনেও সেবা বন্ধ জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে

রবিবার, ১ জুন, ২০২৫ ৯:০৯ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে টানা পঞ্চম দিনেও বন্ধ রয়েছে চিকিৎসাসেবা।
জুলাই গণআন্দোলনে আহতদের সঙ্গে হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীদের মধ্যে ঘটে যাওয়া সহিংস ঘটনার জেরে ২৮ মে সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে হাসপাতালের সব ধরনের কার্যক্রম। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা শত শত রোগী।
রোববার সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের অনুপস্থিতিতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সকাল থেকেই চিকিৎসাসেবার আশায় হাসপাতালে ভিড় করেন বহু রোগী। অনেকে ফিরেছেন ব্যর্থ হয়ে, কেউবা এসেছেন ফলোআপ বা নির্ধারিত অপারেশনের জন্য।
হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রোগীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বিশেষ করে যাঁরা গ্রাম বা দূরদূরান্ত থেকে আসছেন, তাঁদের দুর্ভোগ আরও বেশি। হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের জন্যও খাবার ও ওষুধ বাইরে থেকে সংগ্রহ করতে হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত রোগীদের আশপাশের হাসপাতালের চক্ষু বিভাগ থেকে সেবা নিতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম জানিয়েছেন, “চিকিৎসক ও স্টাফদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কাজে ফিরতে অনিচুক। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে এবং দ্রুত সেবা চালুর চেষ্টা চলছে।”
অচলাবস্থা নিরসনে গত কয়েক দিনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, সচিব, ছাত্র প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট পক্ষের মধ্যে একাধিক বৈঠক হলেও কোনো কার্যকর সিদ্ধান্ত আসেনি। পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে গত ২৫ মে, যখন চারজন আহত ব্যক্তি বিষপান করেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়। এর দুই দিন পর এক আহত ব্যক্তি পরিচালকের কক্ষে গিয়ে শরীরে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে।
পরদিন ২৮ মে হাসপাতাল চত্বরে আহত জুলাই যোদ্ধা, কর্মচারী এবং রোগীদের স্বজনদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালজুড়ে। এতে সেবা কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ইনস্টিটিউটে ৫০ জন জুলাই যোদ্ধা ভর্তি আছেন। এ ছাড়া আত্মহত্যার চেষ্টা করা চারজন ভর্তি আছেন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং একজন সিএমএইচ-এ। সাধারণ রোগীদের অনেকেই নিরাপত্তাহীনতার কারণে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন।
উল্লেখ্য, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে প্রতিদিন গড়ে ১২০০ থেকে ১৫০০ রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকেন। সেবা বন্ধ থাকায় এখন এসব রোগীকে বিকল্প হাসপাতালে সেবা নিতে বাধ্য হতে হচ্ছে।
১১৪ বার পড়া হয়েছে