সর্বশেষ

সারাদেশ

সুন্দরবনে ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা: জেলে ও পর্যটকের চলাচলও বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা
স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা

রবিবার, ১ জুন, ২০২৫ ৭:৫৫ পূর্বাহ্ন

শেয়ার করুন:
মাছ ও বন্যপ্রাণির প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে আজ (১ জুন) থেকে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিন মাস সুন্দরবনে সাধারণ মানুষের প্রবেশ ও মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বন বিভাগ।

এই সময়ে সুন্দরবনের নদী-খাল ও জলাশয়ে মাছ শিকার, ট্রলার চলাচল এবং পর্যটকদের আগমন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকবে।

বন বিভাগ জানায়, প্রতি বছরের মতো এবারও মাছ ও বন্যপ্রাণির প্রজনন নির্বিঘ্ন রাখতে ৯০ দিনের এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। এসময় কেউ বনাঞ্চলে প্রবেশ করতে পারবে না এবং কোনো পাশ বা পারমিট ইস্যু করা হবে না। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সুন্দরবন সংলগ্ন সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে স্থানীয় বনজীবীদের বিষয়টি অবহিত করেছে বন বিভাগ। সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, “সারা বছর হাজারো বনজীবী সুন্দরবনের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাদের আহরণে কিছুটা বিরতি দিয়ে বন ও জীববৈচিত্র্যের টেকসই সুরক্ষায় এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।”

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছর ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময়কে সুন্দরবনের প্রজনন মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ অংশে সুন্দরবনের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার, যার মধ্যে ১ হাজার ৮৭৪ দশমিক ১ বর্গকিলোমিটার জলভাগ। এই জলভাগে রয়েছে ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি এবং ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া। মূলত জুন-আগস্ট সময়কালে অধিকাংশ মাছ ডিম ছাড়ে বলেই এই সময়কে সংরক্ষণ মৌসুম হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।

তবে দীর্ঘ তিন মাসের এ নিষেধাজ্ঞা স্থানীয় জেলে, বাওয়ালী, মৌয়াল, ট্রলারচালক ও পর্যটন সংশ্লিষ্টদের জন্য চরম আর্থিক সংকট সৃষ্টি করে। সাতক্ষীরা রেঞ্জের ট্রলার সমিতির সাবেক সভাপতি আবদুল হালিম বলেন, “এই সময়ে হাজার হাজার বনজীবী কর্মহীন হয়ে পড়েন। তাদের জন্য সরকারি সহায়তা প্রয়োজন। আগে সমুদ্রের ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় জেলেরা চাল সহায়তা পেলেও সুন্দরবনের জেলেরা তেমন কোনো সহায়তা পান না।”

স্থানীয় সূত্র মতে, সাতক্ষীরার সুন্দরবন সংলগ্ন অঞ্চলে প্রায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল। তাদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, নিষেধাজ্ঞার সময়কালে সরকারিভাবে পর্যাপ্ত খাদ্য বা আর্থিক সহায়তা না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। তারা বনজীবীদের জন্য চালসহ জরুরি খাদ্য সহায়তা বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

পরিশেষে, বন বিভাগ সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে—বনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এই মৌসুমে নিষেধাজ্ঞা মেনে চলা সবার দায়িত্ব।

১১৯ বার পড়া হয়েছে

শেয়ার করুন:

মন্তব্য

(0)

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন
সারাদেশ নিয়ে আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন

২৫০ x ২৫০

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
৩২০ x ৫০
বিজ্ঞাপন