শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক চার্জ দাখিল রোববার, সরাসরি সম্প্রচারের সম্ভাবনা

শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫ ১:২১ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে আগামীকাল, রোববার (১ জুন)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম। ট্রাইব্যুনালের অনুমতি সাপেক্ষে এ সময়কার কোর্ট প্রসিডিংস বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) সরাসরি সম্প্রচার করা হতে পারে।
প্রসিকিউটর তামিম জানান, শুনানির সময় যদি আদালত অনুমতি দেন, তবে বিটিভির মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার সম্ভব হবে।
এর আগে ১২ মে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত ‘জুলাই গণহত্যা’র মূল নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম উঠে আসে।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ মোট তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তদন্ত শুরুর ৬ মাস ২৮ দিনের মাথায় প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এতে শেখ হাসিনাকে ‘সুপিরিয়র কমান্ডার’ এবং ‘মূল মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।”
প্রাথমিক অভিযোগ অনুযায়ী, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম অভিযোগটি হলো—১৪ জুলাই একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ও দলীয় বাহিনীকে উসকানি দিয়েছেন ও প্ররোচিত করেছেন। ওই বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের “রাজাকারের বাচ্চা” ও “নাতিপুতি” বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।
দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে সরাসরি নির্দেশ দিয়েছেন ড্রোন, হেলিকপ্টার ও মরণাস্ত্র ব্যবহার করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনরত সাধারণ নাগরিকদের দমন করতে। তদন্তে তার একাধিক টেলিফোন কথোপকথনের রেকর্ড পাওয়া গেছে, যা এসব নির্দেশনার প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
অন্য তিনটি অভিযোগ নির্দিষ্ট কিছু ঘটনার ভিত্তিতে গঠিত, যেখানে তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ নির্দেশনায় হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, জুলাই-আগস্টে সহিংসতায় দেড় হাজারের বেশি মানুষ নিহত ও ২৫ হাজারের বেশি আহত হয়। নারীদের ওপর বিশেষ সহিংসতা চালানো হয় এবং আহতদের চিকিৎসা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করা হয়। শেখ হাসিনা নিজে হাসপাতাল পরিদর্শন করে রোগীদের চিকিৎসা না দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া, আন্দোলনকারীদের ওপর দোষ চাপাতে সরকারি স্থাপনাগুলোতে আগুন দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ মামলার আনুষ্ঠানিক শুনানি ও অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে আগামীকালের শুনানিতে।
১৩২ বার পড়া হয়েছে