মিয়ানমারে শীর্ষ জান্তা জেনারেল নিহত, আরাকান আর্মির দখলদারির অগ্রগতি

শুক্রবার, ৩০ মে, ২০২৫ ৬:২৬ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
চীনা বিনিয়োগকেন্দ্রিক কৌশলগত কিয়াউকফিউ শহরের কাছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বাহিনীর সঙ্গে তীব্র লড়াইয়ে এক শীর্ষ জেনারেল নিহত হয়েছেন।
চলমান এই সংঘর্ষে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) জান্তা বাহিনীর একাধিক অবস্থান দখলে নিয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্র ও রাখাইনের গণমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা যায়, কিয়াউকফিউ-রাম্রি সড়কের পাশের পিয়াইন সি কাই গ্রামসংলগ্ন এলাকায় তীব্র লড়াই চলছে। শহর থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণে জান্তা বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ সদর দপ্তর ঘিরে ফেলেছে আরাকান আর্মি।
গত ২৬ মে (সোমবার) সংঘর্ষের সময় আরাকান আর্মির স্নাইপার হামলায় নিহত হন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কিয়াও মিও আউং এবং একজন সেনা ক্যাপ্টেন। নিহত জেনারেল ছিলেন জান্তা বাহিনীর ১১ নম্বর ডিভিশনের একজন কৌশলবিদ। পরে বিশেষ বিমানে তার মরদেহ ইয়াঙ্গুনে নিয়ে গিয়ে সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
চীনের কৌশলগত স্বার্থে নির্মিত গভীর সমুদ্রবন্দর ও তেল-গ্যাস টার্মিনালের কাছাকাছিও লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্প রক্ষায় চীনা বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ড্রোন হামলার মাধ্যমে জান্তা বাহিনীকে সহায়তা করছে। তবে এই তথ্যগুলো এখনো স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।
২০২৫ সালের শুরুতে মিয়ানমার সরকার একটি আইন পাশ করে, যার আওতায় চীনা নিরাপত্তা বাহিনীকে তাদের বিনিয়োগকেন্দ্রে অস্ত্র বহন ও প্রতিরক্ষা কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর থেকেই কিয়াউকফিউ এলাকায় চীনা নিরাপত্তা কর্মীদের তৎপরতা বৃদ্ধি পায়।
চীনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলে একটি পাইপলাইন রয়েছে, যা কিয়াউকফিউ থেকে চীনের ইউনান প্রদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত। এই পাইপলাইনের নিরাপত্তা নিয়ে এখন ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, যুদ্ধ শহরের দোরগোড়ায় পৌঁছানোয় অনেক জান্তা কর্মকর্তা কিয়াউকফিউ শহর ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। শহর রক্ষা করতে জান্তা বাহিনী স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনীকে একযোগে ব্যবহার করছে, তবে পরিস্থিতি দিন দিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে আরাকান আর্মি আবারও সক্রিয়ভাবে সামরিক অভিযান শুরু করে। এখন পর্যন্ত তারা রাখাইনের ১৭টি টাউনশিপের মধ্যে ১৪টি এবং দক্ষিণ চিন রাজ্যের কিছু অংশ দখলে নিয়েছে। বর্তমানে বিদ্রোহীরা রাজ্যের রাজধানী সিত্তুই দখলের চেষ্টায় রয়েছে।
প্রতিপক্ষের দখল ঠেকাতে জান্তা বাহিনী আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রিত গ্রাম ও শহরে বিমান হামলা চালাচ্ছে, যার ফলে বহু বেসামরিক নাগরিক হতাহত হচ্ছেন। রাখাইন ছাড়িয়ে মাগওয়ে, বাগো এবং আয়েয়ারওয়াডি অঞ্চলেও প্রভাব বিস্তার করছে আরাকান আর্মি।
১২৬ বার পড়া হয়েছে