প্রতিবাদের মুখে অবশেষে পুনর্বহাল পাবনার স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলের নাম

শুক্রবার, ৩০ মে, ২০২৫ ৮:৫১ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
তীব্র জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদের মুখে অবশেষে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামে থাকা পাবনার স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলের পূর্বের নাম পুনর্বহাল করেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
গত ২৮ মে এক অফিসিয়াল পত্রে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়, যা পরদিন ২৯ মে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পাবনাবাসীর মধ্যে স্বস্তির অনুভূতি জাগে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের যুগ্ম সচিব মো. আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে (স্মারক নম্বর: ৩৪.০৩.০০০০.০০৫.১৩.০৮.২০২৪-৪৭৩) জানানো হয়, পাবনার জেলা স্টেডিয়ামের পুরনো নাম ‘শহীদ অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন স্টেডিয়াম’ এবং পাবনা জেলা সুইমিংপুলের নাম ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল সুইমিংপুল’ পুনর্বহাল করা হয়েছে।
এর আগে ২৩ মার্চ জারি করা এক নির্দেশনায় দেশজুড়ে স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলগুলোর নাম সাধারণীকরণ করে নতুন নামকরণ করা হয়। পাবনায় এর ফলে শহীদদের নাম সরিয়ে নতুন করে নামকরণ করা হয় যথাক্রমে 'জেলা স্টেডিয়াম, পাবনা' এবং 'পাবনা জেলা সুইমিংপুল' নামে। বিষয়টি জানাজানি হতেই জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
পাবনার সাধারণ মানুষ, শহীদ পরিবার ও সচেতন নাগরিকরা শুরু করেন প্রতিবাদ ও মানববন্ধন। ২৯ মে দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাবের সামনে সচেতন নাগরিক সমাজের আয়োজনে এক মানববন্ধনও অনুষ্ঠিত হয়।
এই সিদ্ধান্ত বদলের খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন শহীদ পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধারা। শহীদ আমিন উদ্দিনের সন্তান সদরুল আমিন বলেন, "মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী পাবনাবাসী আবারও প্রমাণ করেছে শহীদদের অপমান তারা সহ্য করবে না। এই ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদেই সরকার বাধ্য হয়েছে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে।"
একইভাবে, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুলের ছেলে নুর ইসলাম বলেন, "নাম পরিবর্তনের ঘটনায় আমরা ব্যথিত হয়েছিলাম। এখন সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করায় আমরা কৃতজ্ঞ। আশা করি, ভবিষ্যতে এমন বেদনাদায়ক সিদ্ধান্ত আর নেওয়া হবে না।"
পাবনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ মাসুম বগা বলেন, "মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অস্তিত্ব ও আবেগের প্রতীক। শহীদদের নাম মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত ছিলো দুঃখজনক। জনগণের প্রতিক্রিয়াই প্রমাণ করে দিয়েছে, এই জাতি শহীদদের সম্মান রক্ষা করতে জানে।"
জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল চিঠি হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
পাবনাবাসীর তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে সরকার এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করায় অনেকেই এটিকে জনগণের বিজয় হিসেবে দেখছেন। শহীদদের সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখতে ভবিষ্যতে আরও সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে সর্বমহল থেকে।
১২৯ বার পড়া হয়েছে