গাজায় বিতর্কিত ত্রাণ কার্যক্রম শুরু, জাতিসংঘের আপত্তি

মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০২৫ ১:৩৬ অপরাহ্ন
শেয়ার করুন:
গাজা উপত্যকায় যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত 'গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন' (জিএইচএফ) খাদ্য সহায়তা পাঠানো শুরু করেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
তাদের দাবি, সোমবার থেকে ট্রাকে করে খাদ্যসামগ্রী নির্ধারিত বিতরণ কেন্দ্রে পৌঁছানো হচ্ছে এবং সহায়তার পরিমাণ প্রতিদিন বাড়ানো হবে।
তবে ফিলিস্তিনিরা বলছেন, সোমবার কেউই গাজায় ত্রাণ পৌঁছাতে দেখেননি। যদিও ইসরায়েল এ কার্যক্রমে অনুমোদন দিয়েছে, জাতিসংঘ এ উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। জাতিসংঘ কর্মকর্তারা জানান, এটি গাজার জনগণের প্রকৃত চাহিদা পূরণে ‘অপর্যাপ্ত’ এবং সহায়তা নিরপেক্ষভাবে পৌঁছানোর নিশ্চয়তা নেই।
এদিকে, বিতরণ কার্যক্রম শুরুর একদিন আগেই সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী জেক উড পদত্যাগ করেন। তিনি বলেন, “মানবতা, নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও স্বাধীনতার মতো মানবিক নীতিমালা অনুসরণ করা জিএইচএফ-এর পক্ষে আর সম্ভব নয়।”
তার পদত্যাগের পর অন্তর্বর্তী প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞ জন অ্যাক্রি। তিনি দুই দশক ধরে সামরিক ও মানবিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত রয়েছেন।
জিএইচএফ-এর বিতরণ পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজার দক্ষিণে চারটি বিতরণ কেন্দ্রে সহায়তা দেওয়া হবে। বিতরণ কার্যক্রম শুরুর আগে পরিবারগুলোকে ‘হামাস সংশ্লিষ্টতা’র জন্য স্ক্রিনিং করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এতে বায়োমেট্রিক বা মুখাবয়ব শনাক্তকরণ প্রযুক্তি ব্যবহারের কথাও বলা হয়েছে, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
হামাস এই পদ্ধতির তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, “এটি জনগণকে অনাহারে ঠেলে দেওয়ার সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা এবং খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের পথ উন্মুক্ত করবে।” তারা অভিযোগ করেছে, এই ব্যবস্থা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে।
অন্যদিকে ইসরায়েল দাবি করছে, এ পদ্ধতির উদ্দেশ্য হচ্ছে—ত্রাণ থেকে হামাসকে আলাদা রাখা। তারা অভিযোগ করেছে, হামাস ত্রাণ লুট করে এবং তা ব্যবহার করে জনগণের ওপর কর্তৃত্ব ধরে রাখে। তবে হামাস বলছে, তারা বরং লুটেরাদের হাত থেকে ত্রাণ রক্ষা করছে।
গাজা উপত্যকা তিন মাসেরও বেশি সময় অবরুদ্ধ থাকার পর ইসরায়েল সামান্য কিছু ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। যদিও শত শত ট্রাক ঢুকেছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
ওয়াশিংটন বলছে, তারা যুদ্ধবিরতির পথে ফেরার চেষ্টা করছে। তবে ১৯ মাস ধরে চলমান এই সংঘাতে সেই প্রচেষ্টায় দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।
১৩০ বার পড়া হয়েছে