ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্যমূল্য বাড়ছে

রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫ ৯:৩৭ পূর্বাহ্ন
শেয়ার করুন:
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন আমদানি শুল্কনীতির জেরে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্যের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে একাধিক বৃহৎ কোম্পানি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাবে উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে, যার বোঝা এখন সাধারণ ভোক্তাদের ঘাড়ে গিয়ে পড়ছে।
ট্রাম্প প্রশাসন বেশিরভাগ আমদানির ওপর ১০ শতাংশ এবং চীনা পণ্যের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে। স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের মতো নির্দিষ্ট কিছু পণ্যে শুল্কহার আরও বেশি।
এই শুল্ক বৃদ্ধির কারণে যেসব প্রতিষ্ঠান মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে:
ওয়ালমার্ট:
বিশ্ববিখ্যাত খুচরা বিক্রেতা ওয়ালমার্ট জানিয়েছে, চীনে তৈরি পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধির কারণে মে মাসের শেষ থেকে তাদের পণ্যের দাম বাড়বে। জুনে আরও বাড়তি দাম নির্ধারণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ম্যাটেল:
খেলনা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ম্যাটেল বলছে, তারা ২০ ডলারের নিচের অনেক পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির সিইও জানান, এসব পণ্যের প্রায় অর্ধেকই ভবিষ্যতে বর্তমান দামে থাকবেন না।
বেস্ট বাই:
ইলেকট্রনিক্স খাতের খুচরা বিক্রেতা বেস্ট বাই জানায়, সরবরাহকারীরা অতিরিক্ত শুল্কের বোঝা কিছুটা ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। এতে পণ্যের দাম বাড়ছে।
নিন্টেন্ডো ও সনি:
নিন্টেন্ডো তাদের নতুন গেম কনসোলের অর্ডার স্থগিত করেছিল শুল্ক সংক্রান্ত অনিশ্চয়তার কারণে। পরে জানায়, মূল কনসোলের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও এক্সেসরিগুলোর দাম বাড়বে। সনি-ও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ভাবছে।
শেইন ও টেমু:
চীনা খুচরা ব্র্যান্ড শেইন ও টেমু আগে করমুক্ত সুবিধা পেত। ট্রাম্পের নতুন আদেশে সেই ছাড় বাতিল হওয়ায় দুই প্রতিষ্ঠানই ২৫ এপ্রিল থেকে দাম বাড়িয়েছে। যেমন, টেমুর একটি চেয়ার একদিনেই প্রায় ৮.৫ ডলার বেড়েছে। শেইনের পোশাকেও দেখা গেছে দ্বিগুণ দাম।
ফোর্ড ও সুবারু:
গাড়ি প্রস্তুতকারী ফোর্ড জানিয়েছে, আমদানিকৃত গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ এবং যন্ত্রাংশের অতিরিক্ত শুল্কের কারণে তারা গাড়ির দাম ১.৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে। সুবারুও একই ধরনের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে।
প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বল (P&G):
‘প্যাম্পার্স’, ‘টাইড’ ও ‘চারমিন’ প্রস্তুতকারী কোম্পানিটি কিছু বাজারে দাম বাড়ানোর কথা ভাবছে।
স্ট্যানলি ব্ল্যাক অ্যান্ড ডেকার:
সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানটি এপ্রিলেই গড়ে ৭ থেকে ৯ শতাংশ দাম বাড়িয়েছে। বছরের শেষ নাগাদ আরও এক দফা মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
অ্যাডিডাস:
জার্মান ক্রীড়াপণ্য নির্মাতা অ্যাডিডাস জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে তাদের পণ্যের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ উচ্চ শুল্ক ইতোমধ্যে তাদের ব্যবসায় প্রভাব ফেলছে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, এসব সিদ্ধান্তের ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে এবং সাধারণ ভোক্তার ব্যয় আরও বৃদ্ধি পাবে। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি, এই শুল্কনীতি দেশের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনকে উৎসাহ দেবে এবং চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক হবে।
১২১ বার পড়া হয়েছে